ইয়েমেনে হামলার তথ্য নিয়ে স্ত্রী, বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা! ট্রাম্পের ‘মুখ পোড়াল’ প্রতিরক্ষা সচিবের আরও এক ভুল, দীর্ঘ ‘চ্যাট’ ফাঁস

আবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখ পোড়ালেন তাঁর প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথ। গত ১৫ মার্চ ইয়েমেনে হুথিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে আমেরিকা যে হামলা চালিয়েছিল, তার তথ্য আগেই তিনি স্ত্রী এবং বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন। ওই হামলার আগেই তা নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ ‘আড্ডা’ চলেছে হেগসেথের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে। নির্দিষ্ট একটি ‘গ্রুপ চ্যাট’-এর কথা উল্লেখ করে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স (এনওয়াইটি)। এর আগেও হেগসেথের একটি ভুলে ইয়েমেনে হামলার ছক ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। অভিযোগ, হোয়াইট হাউসের ‘গ্রুপ চ্যাটে’ তিনি ভুল করে এক সাংবাদিককে জুড়ে দিয়েছিলেন। ফলে ইয়েমেনে হামলা সংক্রান্ত কর্তাদের যাবতীয় আলোচনা ওই সাংবাদিক আগে থেকেই জানতে পেরে যান। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার পর অবশ্য প্রতিরক্ষাসচিবের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু দ্বিতীয় বার একই অভিযোগ উঠল হেগসেথের বিরুদ্ধে। এনওয়াইটি-র দাবি, যে সময়ে সাংবাদিককে গ্রুপে যোগ করেছিলেন হেগসেথ, প্রায় একই সময়ে তিনি স্ত্রী, বন্ধুদের সঙ্গেও মার্কিন সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের গোপনীয়তা এবং কর্তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

এনওয়াইটি-র রিপোর্টে দাবি, নিজের ব্যক্তিগত ফোনে একটি কথোপকথনের অ্যাপে ‘গ্রুপ’ খুলেছিলেন হেগসেথ। তাতে সদস্য হিসাবে ছিলেন তাঁর স্ত্রী, ভাই, এক আইনজীবী বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠ আরও কয়েক জন। দফতরের কাজে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য হোয়াইট হাউস থেকে কর্তাদের আলাদা মোবাইল দেওয়া হয়। স্ত্রী, বন্ধুর সঙ্গে আলোচনার সময়ে সেই ফোন ব্যবহার করেননি হেগসেথ। অভিযোগ, কী ভাবে কখন কোন বিমান ইয়েমেনে হুথি ঘাঁটি লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করবে, তা বিশদে আলোচনা করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিগত ‘চ্যাটে’।

হেগসেথের সেই ‘গ্রুপ’-এর নাম ‘ডিফেন্স । টিম হাড্‌ল’। অন্তত ১২ জন সদস্য রয়েছেন তাতে। হেগসেথের স্ত্রী ফক্স নিউজ়ের প্রাক্তন প্রযোজক। অভিযোগ, সামরিক ক্ষেত্রের একাধিক গোপন এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনিও হেগসেথের সঙ্গে ছিলেন। একাধিক সূত্র উল্লেখ করে এই খবর জানিয়েছে এনওয়াইটি।

হেগসেথের কীর্তি প্রকাশ্যে আসার পর ট্রাম্প প্রশাসনের অস্বস্তি বেড়েছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের অন্দরের যাবতীয় আলোচনা, পরিকল্পনা, গোপন এবং সংবেদনশীল তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ট্রাম্পের আধিকারিকেরা সমাজমাধ্যম ব্যবহারে আদৌ স্বচ্ছন্দ এবং যথেষ্ট পারদর্শী কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। এর আগে সাংবাদিককে গ্রুপে জুড়ে দেওয়ার ফলে যে তথ্য ফাঁস হয়েছিল, আমেরিকার আদালত সেই ‘চ্যাট’ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিল। এনওয়াইটি-র নতুন রিপোর্ট নিয়ে জল কত দূর গড়ায়, সে দিকে নজর থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.