দ্বিতীয় বার সিএবি-র সভাপতি হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগোলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবার সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রাক্তন সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হননি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্য ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার শীর্ষ পদে ফিরছেন সৌরভ। দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সৌরভ আবার শীর্ষ পদে এলেন।
এ দিন ইডেনে সৌরভ বলেন, “আমি নির্বাচনের জন্য তৈরি ছিলাম। গত দেড় বছর ধরে বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া বিভিন্ন জায়গায় গাড়িতে চার-সাড়ে চার ঘণ্টা যাতায়াত করে সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভাল রেখেছি। কিন্তু নির্বাচন হচ্ছে না, কী আর করা যাবে।”
সৌরভের সংযোজন, “সমর্থনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সিএবি-তে কোনও বিপক্ষ নেই। সকলেই এই সংস্থার সদস্য। সিএবি এবং বাংলার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করব। দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগের মতো প্রতিযোগিতা ইডেনে হবে। আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।”
সৌরভ জানিয়েছেন, বাংলা দলের পুরনো গৌরব ফেরানোই তাঁদের লক্ষ্য। তিনি ভবিষ্যতে কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল এবং ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলবেন যাতে পারফরম্যান্সের উন্নতি হয়। সিএবি-তে হওয়া আর্থিক দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কোনও সংস্থায় এ রকম হয় না। সব সামলেই এগিয়ে যেতে হবে।”
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভা। সে দিনই নির্বাচন সিএবিতে। রবিবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। সৌরভ এবং তাঁর প্যানেল এ দিনই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিরোধীদের পক্ষে সৌরভের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী না হওয়ায় সভাপতি পদে নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিএবি প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সৌরভ।
সৌরভের প্যানেলের হয়ে সচিব পদে বাবলু কোলে, যুগ্ম সচিব পদে মদন মোহন ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ পদে সঞ্জয় দাস এবং সহ-সভাপতি পদে নীতীশ রঞ্জন দত্ত মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। নিজের দল নিয়ে সৌরভ বলেন, “বাবলু কোলে খুবই অভিজ্ঞ। ওর মতো অভিজ্ঞ এবং জ্ঞানী লোককে পাশে পাওয়া সম্মানের ব্যাপার। নীতীশ রঞ্জন দত্ত, মদন মোহন ঘোষ এবং সঞ্জয় দাস প্রত্যেকেই বাংলার ক্রিকেটকে দীর্ঘ দিন চেনে। বাংলার ক্রিকেটের জন্য ওদের প্রত্যেকের অবদান ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।”
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভা। বোর্ডকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই সভায় সিএবি-র প্রতিনিধিত্ব করবেন সৌরভই। শুক্রবার সব রাজ্য সংস্থা তাদের প্রতিনিধির নাম বোর্ডের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। সিএবি-ও জানিয়ে দিয়েছে সৌরভের নাম। ফলে সৌরভই যে আবার বাংলার ক্রিকেটের মসনদে বসতে চলেছেন, তা সে দিনই এক রকম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।
সিএবি-র প্রাক্তন সভাপতি অভিষেক ডালমিয়াকে সৌরভের বিরোধী হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তিনি নিজেও এই নির্বাচনে লড়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিছু দিন আগে পর্যন্তও নিজের সমীকরণ ঠিক রাখতে নানা অঙ্কও কষেছেন। কখনও বাড়িতে, কখনও দফতরে সিএবি-র নানা কর্তার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। যদিও তিনি কখনও নির্বাচনে লড়ার কথা প্রকাশ্যে আনেননি।