১৪-র বৈভবের জন্য ‘বডিগার্ড’! কেকেআর কোচ পণ্ডিতের পা ছুঁয়ে কলকাতার বিরুদ্ধে নামছে সূর্যবংশী

একটা দল আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছে। তবুও সেই দলের এক জন ক্রিকেটারের জন্য ইডেনের সামনে ভিড়। তার নাম ধরে চিৎকার। তা-ও আবার সে বাংলার কেউ নয়, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়েও খেলে না। কিন্তু মাঠে নামার আগেই কলকাতার নজরে ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী। যাকে ইডেন থেকে বার করে নিয়ে যাওয়ার সময় ‘বডিগার্ড’ প্রয়োজন হল। রাজস্থান রয়্যালস দলের এক জন বৈভবের সঙ্গে সঙ্গে সাজঘর থেকে বাস পর্যন্ত গেলেন। কেউ যাতে বৈভবের কাছে যেতে না পারে, কেউ যাতে কথা বলতে না পারে।

কলকাতার বিরুদ্ধে রবিবার খেলতে নামবে রাজস্থান রয়্যালস। সেই ম্যাচে খেলতে নামার আগে কেকেআরের কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের পা ছুঁয়ে প্রণাম করল বৈভব। এক বার নয়, দু’বার। শনিবারের ইডেনে দেখা গেল এই দৃশ্য। রাজস্থানের অনুশীলন শেষে মাঠ ছাড়ার আগে বৈভব দূর থেকে দেখতে পেয়েছিল ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত কোচ পণ্ডিতকে। মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিজে এগিয়ে গেল সে। পণ্ডিতের সামনে পৌঁছেই তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম। দু’-তিন মিনিট কথা হল দু’জনের। কেকেআরের বিরুদ্ধে নামার আগে সেই দলের কোচের থেকেই হয়তো কিছু পরামর্শ নিল বৈভব।

বিহারের বৈভব এখন চর্চার কেন্দ্রে। শনিবার দুপুরে ইডেনে অনুশীলন করতে নেমেছিল সে। প্রথমে ১৫ মিনিট থ্রো ডাউন নিল। সেই সময় বার বার ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌর তার সঙ্গে কথা বলেন। বুঝিয়ে দেন কী ভাবে খেলতে হবে। থ্রো ডাউন পর্বের পর বৈভবকে দেখা গেল কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে কথা বলতে। কিছু ক্ষণ কথা বলার পর বৈভবের পিঠ চাপড়ে দিলেন দ্রাবিড়। আর ১৪ বছরের কিশোর চলে গেল নেটে ব্যাট করতে। সেখানে কখনও পেসার, কখনও স্পিনার, কখনও আবার থ্রো ডাউনের সামনে পড়তে হল বৈভবকে। হাত খুলে খেলল সে। আগের ম্যাচে শূন্য করেছিল বলে গুটিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। ইডেনের গ্যালারিতেও বল ফেলল। কিছু বল ফস্কালেও বড় শট খেলা থামাল না বৈভব।

Chandrakant Pandit

মাত্র ১৪ বছর বয়সে আইপিএলের মঞ্চে বৈভব। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে শতরানও করেছিল। ৩৫ বলে করা সেই শতরানের পরেই বিশ্ব জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে সে। ভারতীয় ক্রিকেটের আগামী দিনের তারকা বৈভব। সুনীল গাওস্কর এখনই তাকে নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসতে বারণ করেছেন। সচিন তেন্ডুলকর তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। আইপিএল থেকে ছিটকে যাওয়া রাজস্থান রয়্যালসকে আলোচনার কেন্দ্রে রেখে দেওয়া বৈভব সেই সব কথা শুনছে কি না বলা মুশকিল।

শনিবার ইডেনের বাইরে বৈভবের জন্য চিৎকার করছিলেন বেশ কিছু সমর্থক। রাজস্থান দলে অনেক তারকা থাকলেও সবচেয়ে বেশি চিৎকার তার জন্য। বৈভব ইডেন থেকে বার হল কানে হেডফোন গুঁজে। আশপাশের চিৎকার এখনই শুনতে চায় না সে। শুধু রান করে যেতে চায়।

রবিবারের দুপুরে ইডেনে কলকাতা এবং রাজস্থান মুখোমুখি। সেই ম্যাচে কেকেআরের সমর্থক যেমন থাকবে, তেমনই বৈভবের জন্য চিৎকার হবে। শনিবারের ইডেনই সেটা বুঝিয়ে দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.