বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের মতানৈক্য, তার জেরে বিক্ষোভ, সর্বোপরি বার বার অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার কারণে চলতি শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দফায় ৬৫ ঘণ্টা সময় ‘নষ্ট’ হয়েছে। এই অধিবেশনের মোট তিন দফায় লোকসভায় প্রায় ৭০ ঘণ্টা সময় ‘নষ্ট’ হয়েছে।
২৫ নভেম্বর সংসদে শুরু হয়েছে শীতকালীন অধিবেশন। শেষ হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। বিরোধীদের বিক্ষোভের কারণে এই সমাপ্তিও হয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবেই। পরিসংখ্যান বলছে, শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দফায় ৫ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট, দ্বিতীয় দফায় ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট এবং তৃতীয় দফায় ৬৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট সময় ‘নষ্ট’ হয়েছে। প্রথম দফায় লোকসভায় আলোচনা হয়েছে ৩৪ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। দ্বিতীয় দফায় ১১৫ ঘণ্টা ২১ মিনিট এবং তৃতীয় দফায় ৬২ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে লোকসভায়। প্রথম দফায় সাত , দ্বিতীয় দফায় ১৫ এবং তৃতীয় দফায় ২০ বার অধিবেশন বসেছে।
অধিবেশনের সূচনায় লোকসভা উত্তপ্ত ছিল ‘আদানি ঘুষকাণ্ড’ নিয়ে। গত ২০ নভেম্বর আমেরিকার আদালতে আদানিদের বিরুদ্ধে ‘প্রমাণ-সহ অভিযোগপত্র’ (ইনডিক্টমেন্ট) জমা পড়েছিল। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত পাওয়ার বিনিময়ে ভারতের সরকারি আধিকারিকদের (মন্ত্রী এবং আমলা) ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাইপো সাগর-সহ সাত জনকে অভিযুক্ত করা হয় তাতে। সেই নিয়েই বিরোধীরা সরব হন অধিবেশনে। শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দফায় ওয়াকফ, ‘এক দেশ এক ভোট’ বিল, মণিপুর হিংসা, সংবিধান-বিতর্ক এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে সরকার বনাম বিরোধীদের তরজা তুঙ্গে ওঠে। তৃতীয় তথা শেষ দফায় সংবিধানের প্রণেতা বিআর অম্বেডকরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে সাংসদদের এফআইআর ঘিরে সরগরম ছিল লোকসভা।
শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দফায় একটিও বিল পেশ হয়নি লোকসভায়। দ্বিতীয় দফায় ১২টি বিল পেশ করা হয়। তার মধ্যে চারটি বিল পাশ হয়েছে। তৃতীয় দফায় মোদী সরকার পাঁচটি বিল পেশ করে, যার মধ্যে চারটি পাশ হয়েছে। সেগুলি হল ব্যাঙ্কিং আইন (সংশোধনী) বিল ২০২৪, রেলওয়ে (সংশোধনী) বিল ২০২৪, বিপর্যয় মোকাবিলা (সংশোধনী) বিল ২০২৪, অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন (তিন নম্বর) বিল ২০২৪। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দফায় লোকসভায় ৪১টি বিষয় উঠেছে, দ্বিতীয় দফায় ৩৫৮ এবং তৃতীয় দফায় ৩৯৭টি বিষয় উঠেছে।