Bharatiya Kisan Sangha, ভারত মাতার বর চাইতে উদ্যোগ নিল ভারতীয় কিষাণ সংঘ

 বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন, আর তা উৎপাদন করেন একজন কৃষক। শাস্ত্রে বলে, কৃষিকাজ হলো সবচেয়ে উত্তম পন্থা। আবার শাস্ত্রে উল্লিখিত পঞ্চপিতার অন্যতম হলো অন্নদাতা পিতা। অন্নদাতারা অন্নের সংস্থান করছেন বলে সবাই খেয়ে বেঁচে আছেন। পাঁচতারা হোটেল, রেঁস্তোরা, ক্যাফে বা বিভিন্ন দোকানে বা বাড়িতে যখন খাবার খান তখন কতজন মানুষ ভাবেন যে, যারা এই খাবার উৎপাদন করেছেন তারা ফসলের ন্যায্য দাম তো দূরে থাক উৎপাদন মূল্যও পাচ্ছেন না। ভরা পেটে শিল্প-সাহিত্য চর্চা, বিদ্যার্জন, রাজনীতি, ধর্ম প্রচার ইত্যাদি সব করা যায় কিন্তু খালি পেটে কিছুই করা যায় না।

এই পেট যারা ভরিয়ে রাখেন সেই কৃষকদের পেটেই অন্ন নেই। ‘পরজীবী’ হয়ে খাবার খান যারা,তারা যেমন ভাবেন না কৃষকদের কথা একবারের জন্যও তেমন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারও যেন বধির হয়ে আছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের কিছু অংশের কৃষক ছাড়া সারা ভারতের কৃষকদের আর্থিক অবস্থা ভীষণ শোচনীয়। এই অবস্থা থেকে কৃষকদের বের করার জন্য ভারত মাতার বর চাইতে ‘ভারত মাতা পূজন’-এর আয়োজন করছে ‘ভারতীয় কিষাণ সংঘ’।

আগামী ২৬ শে জানুয়ারি, রবিবার, প্রজাতন্ত্র দিবস। এই দিন ভারতীয় কিষাণ সংঘের পক্ষ থেকে ‘ভারত মাতা’ পূজন করা হয় প্রতি বছর। কিষাণ সংঘের চারটি অবশ্য পালনীয় দিনের মধ্যে অন্যতম ভারত মাতা পূজন দিবস।

আজ ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের পক্ষ থেকে ভারত মাতা পূজন দিবসের গুরুত্ব নিয়ে একটি আন্তর্জালিক সভা হয়। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সাধারণ সম্পাদক আশিস সরকার, সংগঠন মন্ত্রী অনিল রায় ও জেলার বিভিন্ন স্তরের কার্যকর্তা। এই সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় কিষাণ সংঘের অখিল ভারতীয় কার্যকারিণী সদস্য কল্যাণ কুমার মন্ডল। তিনি ভারত মাতা পূজনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।

কল্যাণ বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ অন্যান্য দেবতাদের পূজা বাদ দিয়ে আগামী পঞ্চাশ বছর ভারত মাতা পূজনের কথা বলেছিলেন। ভারত মায়ের অনেক কৃষক সন্তানরা আজও নিরন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অন্নদাতা কৃষকদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের চাষিরা শীতকালীন ফসলের দাম পাচ্ছেন না। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শীম, মুলা, টমেটো ইত্যাদি পাঁচ-ছয় টাকা কেজি বা তার চেয়েও সস্তায় বিক্রি হচ্ছে। বিঘা বিঘা ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে চাষিরা দাম না পেয়ে। এই সব দুঃখী কৃষকদের দুর্দশা ভারত মাতার পক্ষেই একমাত্র দূর করা সম্ভব। মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে বধির সরকার ও জনগণের কানে দুঃখ জানাতে হবে। না শুনলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নেমে শুনতে বাধ্য করব আমরা।

এরপর আশিস সরকার বলেন, ভারত মাতা পূজনের দিন ভারত মাতার গলায় মালা ও পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। মায়ের কাছে কৃষকদের দুর্দশা মোচনের জন্য আশীর্বাদ চাইতে হবে।

আজকের এই সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রমিতি রায় ও সঞ্চালনা করেন ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের ‘প্রচার প্রমুখ’ ও ‘ভারতীয় কিষাণ বার্তা’ পত্রিকা সম্পাদক মিলন খামারিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.