‘ভারত বন্‌ধ’ আদিবাসী সংগঠনের, আসানসোলের কাছে আটকানো হল ট্রেন, ভোগান্তি পুরুলিয়া, মালদহেও

সারনা ধর্মের পৃথক ‘কোড’ চালু-সহ একাধিক দাবিতে ‘ভারত বন্‌ধ’-এর ডাক দিয়েছে আদিবাসীদের সংগঠন ‘আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান’। শনিবার সকাল থেকেই আসানসোল রেলওয়ে ডিভিশনের কালীপাহাড়ি স্টেশনে লাইনের উপর বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশ। আর তার জেরে সকাল থেকেই ওই ডিভিশনে থমকে যায় ট্রেন চলাচল। আপাতত অবরোধ উঠলেও ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে রেল সূত্রে খবর। অন্য দিকে, এই বন্‌ধ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে পুরুলিয়ার কাঁটাডি স্টেশন, মালদহের আদিনা স্টেশনেও রেল অবরোধ শুরু করেছেন আদিবাসীরা। বেশ কিছু ট্রেন এখনও দেরিতে চলছে। ফলে সপ্তাহান্তে কাজে বেরিয়ে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের।

শনিবার সকাল ৬টা ৫০ থেকে আসানসোল ডিভিশনে রেল অবরোধ শুরু হয়। চলে ৭টা ৩৫ পর্যন্ত। তার পর ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক হয়। তবে ওই সময়ের মধ্যেই কালীপাহাড়ি স্টেশনের আগে পরে বেশ কিছু ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। ১২ ঘণ্টা বনধের প্রভাব পড়েছে বাঁকুড়া জেলাতেও। শনিবার বন্‌ধ সমর্থনকারীরা ছাতনার জোড়হীড়ায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এই অবরোধের জেরে সকাল থেকেই বাঁকুড়া শালতোড়া রাজ্য সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়।

আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের কর্মীদের দাবি, শনিবার সকালে যখন তাঁরা ঝাঁটিপাহাড়ি স্টেশনের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন, সেই সময় জোড়হীড়া মোড়ের কাছে তাঁদের পথ আটকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এর পরই সেঙ্গেল অভিযানের কর্মীরা রাস্তায় বসে অবরোধ শুরু করেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই অবরোধ চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের বাঁকুড়া জেলার নেতা ধনেশ্বর হাঁসদা।

আদিবাসীদের মধ্যে সারনা ধর্ম যাঁরা মানেন, তাঁদের ‘রাষ্ট্রীয় গুরু’ সালখান মুর্মুর নেতৃত্বে এ দিনের ভারত বন্‌ধ ডাকা হয়েছিল। সেই মতো পশ্চিম বর্ধমানের কালীপাহাড়ি স্টেশনে অবরোধ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবি, সারনা ধর্মকে মান্যতা দিতে হবে। তা ছাড়াও তাঁদের বক্তব্য, ভারতে ৩৮ শতাংশ আদিবাসী ছিল। কমতে কমতে আজকে তা ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, আদিবাসীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরণ হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের প্রধান ভাষা হিসেবে সাঁওতালিকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় অযোধ্যা পাহাড়কে সরকার ঘিরে বলছে বলে অভিযোগ করে, তার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আদিবাসীদের দাবি, এই পাহাড় তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.