Bengal STF: পুজোর শুরুতেই মাদকবিরোধী অভিযানে সাফল্য, বাজেয়াপ্ত ১৬ কোটির নিষিদ্ধ মাদক

পঞ্চমীর উৎসবের মধ্যেই বেঙ্গল এসটিএফ-র মাদক বিরোধী অভিযানে মিলল ব্যাপক সাফল্য। বনগাঁর গাইঘাটাতে হেরোইন তৈরীর কারখানায় ১৯ অক্টোবর তল্লাশি চালিয়ে মিলল প্রায় ১৬ কোটি টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ মাদক। গ্রেফতার দুই মহিলাসহ মোট চারজন। কোটি কোটি টাকার ক্রুড হেরোইন এনে এই কারখানায় চলতো মিশ্রণ ও পরিশোধন। কলকাতা, হাওড়া ও উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হতো এখানকার মাদক।

গোপন খবরের ভিত্তিতে বেঙ্গল এসটিএফ-এর একটি টিম পঞ্চমীর সকালে পৌঁছায় গাইঘাটা থানার বিষ্ণুপুর গ্রামে। সেখানে পৌঁছে থানা-গামী পাকা রাস্তার থেকে বাঁদিকে দেড় মিনিট পায়ে হেঁটে গেলে একটি ছোটখাটো খামারবাড়ি। মালকিন চল্লিশোর্ধ্ব কাকলি রায়। ছয়ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা দোতলা বাড়ির মধ্যে পোলট্রি, ছাগল ও গরুর থাকার ছাউনি।

বাড়িতে মালকিন কাকলি ছাড়াও অভিজিৎ বিশ্বাস, তপন মন্ডল ও ডলি সরদার নামের এক মহিলাকে সেখানে পেয়ে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। একতলায় মাদক-সংক্রান্ত কিছু না পেয়ে এসটিএফ টিমের সদস্যরা এরপর মার্বেল বাঁধানো সিঁড়ি বেয়ে উঠে যায় দোতলায় এবং সেখানেই তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ।

দোতলার শোবার ঘর, বাথরুম এবং রান্নাঘরকে রীতিমতো একটি হেরোইন তৈরী করার কারখানায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। থরে থরে সাজানো রয়েছে হেরোইনের প্যাকেট, কোনও ঘরে হাই-ভোল্টেজ আলোর নীচেই আলাদা আলাদা পাত্রে শুষ্ক করার জন্য রাখা আছে বিশেষ প্রকার লিক্যুইড মিশ্রিত হেরোইন। কোনও ঘরে চলছে ফিল্টারিং, কোনও ঘরে প্যাকেজিং।

তল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছে প্রায় আট কিলোগ্রাম হেরোইন, পাঁচ কিলোগ্রাম মোট ওজনের একপ্রকার বিশেষ গুঁড়ো যা মিশিয়ে নেশার মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়, দশ কিলোগ্রাম ওজনের এসিটিক এনহাইড্রেট তরল যার সাহায্যে ক্রুড হেরোইন পরিশোধন করা হয়। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে চল্লিশ কিলোগ্রাম সোডিয়াম কারবোনেট, দুইটি ইলেকট্রনিক ওজন যন্ত্র, একটি মিক্সার গ্রাইন্ডার, প্রচুর প্লাস্টিক প্যাকেট, একটি সিলিং মেশিন, দুইটি আইফোন এবং তিনটি স্মার্টফোন  সহ অন্যান্য জিনিস।

এরপরই গ্রেফতার করা হয় দুই মহিলা ও দুই ব্যক্তিকে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায় প্রায় বছরখানেক ধরে চলছে এই কারখানা। মালকিন কাকলি তাঁর ব্যবসার পার্টনারদের থেকে ক্রুড হেরোইন এনে এই কারখানাতে পরিশোধন ইত্যাদি করে বিভিন্ন পাচারকারীদের মাধ্যমে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের কাছে পৌঁছে দিত। বিনিময়ে পেত বিপুল পরিমাণ মুনাফা।

এই ঘটনায় গাইঘাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বেঙ্গল এসটিএফ। অভিযোগের উপর মাদক আইনে কেস রুজু করা হয়েছে। এই নিষিদ্ধ মাদকচক্রে অন্যান্য জড়িতদের বিরুদ্ধেও চলবে তদন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.