বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল চায় পদ্ম, কমিশনকে চিঠি, বীরভূমের বদলা চায় রাজ্য বিজেপি!

বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল চায় বিজেপি। নির্বাচন কমিশনকে সেই মর্মে চিঠি দিয়েছেন ওই আসনের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। রাজ্য বিজেপির তরফেও একই দাবি জানানো হয়েছে কমিশনকে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল প্রার্থী তাঁর মনোনয়নের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নো ডিউজ় সার্টিফিকেট জমা দেননি। মঙ্গলবার বেলা ৩টে অবধি তা দেওয়ার সময় ছিল। সেই সময় পার হওয়ার পরেই কমিশনে গেল বিজেপি।

প্রসঙ্গত, বীরভূম আসনে বিজেপি প্রথমে প্রার্থী করে প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে। কিন্তু রাজ্য সরকারের থেকে নো ডিউজ় সার্টিফিকেট না-ও মিলতে পারে আশঙ্কা করে ওই আসনে দেবতনু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করে রেখেছিল পদ্মশিবির। আশঙ্কা মিলেও যায়। মনোনয়ন বাতিল হয় দেবাশিসের। এর পর দেবাশিস এবং রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব প্রথমে কলকাতা হাই কোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে যান। কিন্তু তাতে কোনও সুরাহা হয়নি। শেষ পর্যন্ত দেবতনুই বিজেপি প্রার্থী হিসাবে বীরভূমে লড়ছেন। সেই উদাহরণ টেনে হাজি নুরুলেরও মনোনয়ন বাতিল করা হোক, দাবি তুলেছে বিজেপি। দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘হাজি নুরুলের মনোনয়ন যাতে বাতিল হয়, তার জন্য কমিশনকে জানানো হয়েছে। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব। প্রয়োজনে হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’

তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্ক্রুটিনির শেষ পর্যন্ত বিবিধ তথ্য জমা দেওয়া যায়। বুধবার স্ক্রুটিনির শেষ দিন। তার মধ্যে যা জমা দেওয়ার, জমা পড়ে যাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দু’হাজার টাকায় সন্দেশখালির মহিলাদের ইজ্জত বিক্রি করেছে বিজেপি। ওরা জানে, বসিরহাটে গণভোটে প্রত্যাখ্যাত হবে। যে কায়দায় সুরাত, ইনদওরে বিরোধী প্রার্থীদের সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি, বাংলাতেও সেই কৌশল নিতে চাইছে। কিন্তু সফল হবে না।’’

কেন হাজি নুরুলকে নো ডিউজ় সার্টিফিকেট দিতে হবে বলে দাবি করছে বিজেপি?

বিজেপি নেতা জগন্নাথ বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘তৃণমূলের বসিরহাটের প্রার্থী হাজি নুরুলের মনোনয়নে গুরুতর গলদ রয়েছে। যা আইন এবং নির্বাচনী বিধি মেনে হয়নি। তাই আমরা তাঁর মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছি। তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল পঞ্চদশ লোকসভার সদস্য ছিলেন। পঞ্চদশ লোকসভা শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের ১৮ মে। হাজি নুরুল মনোনয়ন দাখিল করেছেন ৭ মে। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, কোনও প্রার্থী শেষ ১০ বছরে যদি কোনও সরকারি পরিষেবা পেয়ে থাকেন, সরকারি কোনও বিল যদি তাঁর বাকি থাকে, তা মিটিয়ে দিতে হয়। তাঁর যে সরকারের ঘরে কোনও বকেয়া নেই, তা হলফনামায় জানানোর কথা। হাজি নুরুল ২০১৪ সালের ১৮ মে পর্যন্ত লোকসভার সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৮ মে তাঁর ১০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু তিনি মনোনয়ন দিয়েছেন তাঁর ১২ দিন আগে। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তাঁরও নো ডিউজ় সার্টিফিকেট দেওয়া বাধ্যতামূলক। আমরা যে হলফনামা দেখেছি, তাতে তিনি ওই সার্টিফিকেট জমা দেননি। তাই আমরা ওই মনোনয়ন বাতিলের আবেদন করেছি।’’

জগন্নাথ আরও বলেন, ‘‘নো ডিউজ় সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার জন্য বীরভূমে আমাদের প্রার্থী দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিল। তাই হাজি নুরুলের মনোনয়নও বাতিল করা উচিত। তাঁর সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ১৪ মে বিকেল ৩টে পর্যন্ত।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.