বাঁশদ্রোণী-অশান্তি: বিজেপি নেত্রী-সহ গ্রেফতার ৫ জন, থানায় ধর্না রূপার! দেখাই নেই তৃণমূল কাউন্সিলরের

পে লোডারের ধাক্কায় নবম শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তপ্ত বাঁশদ্রোণী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছাত্রের মৃত্যুর পর থেকে এলাকায় দেখা মেলেনি স্থানীয় কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারের। ক্ষোভ জমেছে রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীরা। পাটুলি থানার ওসিকে আটকে রেখে বিক্ষোভ চলে। পরে কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার প্রদীপ ঘোষালও বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। বিকালে কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত ঘটনাস্থলে গেলে শুরু হয় ধরপাকড়। কিন্তু সকাল গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিতাকে এলাকায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাটুলি থানায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিজেপি নেত্রী রুবি মণ্ডল-সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরই মধ্যে বুধবার রাতে বাঁশদ্রোণী থানায় পৌঁছে যান বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। নেতৃত্বে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। থানার ভিতরে প্রবেশ করেন রূপা। বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, কোনও অভিযোগ ছাড়াই বিজেপি নেত্রী রুবি মণ্ডলকে আটক করে বাঁশদ্রোণী থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে বাঁশদ্রোণী থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। রূপা বলেন, “আমি রাতটা থানাতেই থাকব। সকাল থেকে ওঁরা ধরতে পারেননি অভিযুক্তদের। তবে আমি আশা করছি ওঁরা ধরে ফেলবেন। যতদিন না অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ততক্ষণ আমি বসে থাকব এখানে।”

বিজেপির দাবি, পে লোডারে পিষে পড়ুয়ার মৃত্যুর পর ক্ষিপ্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন রুবিও। এর পরে বিকাল ৪টে নাগাদ পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় বলে দাবি পদ্মশিবিরের। শুধু তাই নয়, বিজেপি নেত্রী রূপার দাবি কাউন্সিলরের লোকেরাই অভিযুক্তদের ঘটনাস্থল থেকে বার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। এমন অবস্থায় অভিযুক্তেরা ধরা না পড়া পর্যন্ত থানায় বসে থাকার হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার সকালে পড়ুয়ার মৃত্যুর পর থেকেই রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এমনকি পাটুলি থানার ওসি ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। ওসিকে রাস্তার কাদাজলে দাঁড় করিয়ে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন। পরে কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে ঘিরেও বিক্ষোভ চলেছিল।

কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ছাত্র। ওই এলাকার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছিল। অভিযোগ, কোচিং সেন্টারে যাওয়ার সময় ছাত্রকে ধাক্কা মারে জেসিবি। গাছের সঙ্গে তাকে পিষে দেয়। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।

কাউন্সিলরকে এলাকায় দেখা না গেলেও সংবাদমাধ্যমকে তিনি রাস্তার খারাপ দশা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থার কাজ চলছে। সেই কাজ করতে তো সময় লাগে। এটা বুঝতে হবে। সাড়ে ছ’ফুট উঁচু পাইপের কাজ চলছে এলাকায়। সেখানে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এর আগে এত বড় বড় কাজ হয়েছে, এমন তো কখনও হয়নি। এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত। মৃতের পরিবারের পাশে আছি। আর কখনও যেন না ঘটে, সেটাই চাইব।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.