নিজের বাড়িতেই খুন হলেন এক আইসিডিএস কর্মী। মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার ইন্দপুর থানার বৃন্দাবনপুর গ্রামে। মৃতার নাম ভারতী গোস্বামী ( ৫১)। আইসিডিএস কর্মী হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি ভারতী বিভিন্ন সময়ে সুদের বিনিময়ে স্থানীয়দের টাকা ধার দিতেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই আর্থিক লেনদেনের জেরেই খুন কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ভারতীর পরিবারের সদস্যরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন সেই দিকেই।
ইন্দপুর থানার বৃন্দাবনপুরের গোস্বামীপাড়ার নিজের একতলা বাড়িতে একা থাকতেন ভারতী। স্বামী প্রদীপ এবং একমাত্র ছেলে সন্দীপ কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। মেয়ে জয়শ্রী চক্রবর্তীর থাকেন তাঁর শ্বশুরবাড়ি বাঁকুড়ার তালড্যাংরার সাবড়াকোণে। জয়শ্রীর দাবি, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি একাধিকবার মাকে ফোন করেও সাড়া পাননি। শেষে প্রতিবেশীদের ফোন করেন তিনি। প্রতিবেশীরা ভারতীর বাড়িতে পৌঁছে দেখেন সদর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। পিছনে দিকের দরজা বাইরে থেকে শিকল দেওয়া। শিকল খুলে ভেতরে ঢুকতেই প্রতিবেশীরা দেখতে পান উঠোনে পড়ে রয়েছে ভারতীর রক্তাক্ত মৃতদেহ। রাতেই ইন্দপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে স্থানীয় ডাঙারামপুর গ্রামের আইসিডিএস কেন্দ্রে কাজ করার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি স্থানীয়দের সুদে টাকা ধার দিতেন ভারতী। তার জেরে ভারতী খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ তাঁর ছেলে সন্দীপের। তাঁর কথায়, ‘‘মা বিভিন্ন সময় স্থানীয় মানুষদের টাকা ধার দিতেন। আমরা বার বার মাকে এ সব করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু, তিনি আমাদের কথা শোনেননি। আমাদের ধারণা, সেই সংক্রান্ত কোনও অশান্তির জেরে মাকে খুন হতে হয়েছে। আমরা খুনির ফাঁসি চাই।’’
মৃতার স্বামী প্রদীপ গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‘মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা শেষ বার টেলিফোনে স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তার পর রাতে খবরটা পেয়ে ছুটে এসেছি। আমার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও শত্রুতা ছিল বলে শুনিনি। বুঝতে পারছি না কেন ওকে খুন করা হল। আমরা দোষীর কঠোর শাস্তি চাই।’’
ভারতীকে খুন করা হল কেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, নিহতের পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপারেশন) গণেশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাঁরা সম্ভাব্য সমস্ত কারণ খতিয়ে দেখছেন।