আফগানিস্তানের সামনে যে হংকং উড়ে গিয়েছিল, তাদের হারাতে ঘাম ঝরাতে হল বাংলাদেশকে। এক একটা সময় মনে হচ্ছিল, হংকং দলে দু’এক জন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার থাকলে খেলার ছবিটা অন্য রকম হতে পারত। অভিজ্ঞতায় মার খেল তারা। অতিরিক্ত রানের খেসারতও দিতে হল তাদের। অধিনায়ক লিটন দাসের অর্ধশতরানে জিতল বাংলাদেশ। ১৪ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতলেও তাদের এই খেলা মন ভরাবে না সমর্থকদের। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চিন্তা বাড়বে তাঁদের।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ভেঙে পড়েছিল হংকংয়ের ব্যাটিং। সেই কারণেই হয়তো টস জিতে প্রথম বল করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন। হংকংয়ের ওপেনার অংশুমান রথ এই ম্যাচেও ব্যর্থ। কিন্তু অপর ওপেনার জিশান আলি নজর কাড়লেন। ৩০ রান করলেন তিনি। নিজ়াকত খান ও অধিনায়ক ইয়াসিম মুর্তাজ়াও ভাল ব্যাট করেন। নিজ়াকত সর্বাধিক ৪২ রান করেন। মুর্তাজ়া করেন ২৮ রান। তাঁদের জুটিতে ভাল গতিতে এগোচ্ছিল হংকং। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মুর্তাজ়া। তার পরে আবার রান তোলার গতি কমে যায়। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান করে হংকং। মুর্তাজ়া আউট না হলে ১৬০ রানও করতে পারত হংকং।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নজর কাড়লেন তানজিম হাসান সাকিব। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। মুস্তাফিজ়ুর রহমান উইকেট না পেলেও ভাল বল করেছেন। তাসকিন আহমেদ ২ উইকেট পেলেও রান দিয়েছেন।
আবু ধাবির উইকেট বেশ মন্থর। এই উইকেটে ১৪৪ রান তাড়া করা খুব সহজ নয়। বাংলাদেশের শুরুটা ভাল হয়েছিল। পারভেজ হোসেন ইমন দ্রুত রান তুলছিলেন। তাঁকে ফেরান আয়ুষ শুক্ল। অপর ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম করেন ১৪ রান। দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের রান তোলার গতি কিছুটা কমে যায়।
কিন্তু হংকংয়ের বোলারেরা অতিরিক্ত রান দিয়ে বাংলাদেশের কাজ সহজ করে দিচ্ছিলেন।বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন ও অভিজ্ঞ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় জানতেন, এই মাঠে বড় শট খেলার চেষ্টা করলে ঝুঁকি বাড়বে। তাই দৌড়ে রানের দিকে নজর দেন তাঁরা। জরুরি রানরেট খুব বেশি না থাকায় সমস্যা হচ্ছিল না। শেষ দিকে বড় শট খেললেন তাঁরা। এই জুটিই দলকে জেতাল। ৩৯ বলে ৫৯ রান করে লিটন আউট হলেও তত ক্ষণে খেলা প্রায় জিতে গিয়েছে বাংলাদেশ। হৃদয় ৩৫ রানে অপরাজিত থাকলেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জিতলেও নেট রানরেট খুব একটা বাড়িয়ে রাখতে পারল না তারা। প্রতিযোগিতায় পরের দিকে এই রানরেট সমস্যায় ফেলতে পারে তাদের।
বাংলাদেশ জিতলেও তাদের যে ভাবে পরিশ্রম করতে হল, তাতে চিন্তা বাড়বে লিটনের। হংকংয়ের মতো দুর্বল দলকে অল আউট করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলারেরা। ব্যাটারদের দেখেও মনে হয়েছে, আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। হংকংয়ের বিরুদ্ধেই যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে।