ক্রিকেট মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরল সৌজন‍্য! আউট হতে হতে বেঁচে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার, কী ঘটেছে টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে?

টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালে হঠাৎ করে আলোচনার কেন্দ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড বেডিংহ্যাম। বিউ ওয়েবস্টারের বল তাঁর ব্যাটে লেগে প্যাডের মধ্যে ঢুকে যায়। ক্যাচ আউট হতে পারেন এই আশঙ্কায় হাত দিয়ে বলটি মাটিতে ফেলে দেন তিনি। বেডিংহ্যাম বল মাটিতে ফেলে দেওয়ার পর ‘হ্যান্ডলিং দ্য বল’ আউটের আবেদন করেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারে। এর পরই ক্রিকেট মাঠে বিরল সৌজন্য দেখান অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরা।

বল বেডিংহ্যামের প্যাডের ফাঁকে ঢুকতেই কাছে চলে যান ক্যারে। বল মাটিতে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেই ক্যাচ ধরার চেষ্টা করতেন তিনি। তা হলে আউট হয়ে যেতেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার। সেই সম্ভাবনা এড়াতে গিয়ে আর একটি আউটের পরিস্থিতি তৈরি করেন বেডিংহ্যাম। কেন এমন করলেন? দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার বলেছেন, ‘‘আসলে আমি বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ক্যারে আমার খুব কাছেই দাঁড়িয়েছিল। আমি নড়াচড়া করলে বলটা পড়ে যেতে পারত। তাই আগেই বলটা হাত দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছি। কাজটা হয়তো ঠিক হয়নি। একটু ঝুঁকির হয়েছে। যাই হোক আম্পায়ারেরা ডেড বল ঘোষণা করায় তেমন কিছু হয়নি।’’

দ্বিতীয় দিন মধ্যহ্নভোজের বিরতির আগের ওভারের এই ঘটনায় ক্যারের আউটের আবেদনে মাঠের দুই আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ এবং ক্রিস গ্যাফানি আগ্রহ দেখাননি। তাঁরা আলোচনা করে ‘ডেড বল’ ঘোষণা করায় বেঁচে যান বেডিংহ্যাম। এতে প্যাট কামিন্স বিরক্ত নন। তিনি জানিয়েছেন, ‘ডেড বল’ ঘোষণা না হলেও তাঁরা আবেদন ফিরিয়ে নিতেন। কামিন্স বলেছেন, ‘‘আম্পায়ারেরা ডেড বল ঘোষণা করায় আমাদের কিছু করতে হয়নি। তা না হলেও আমরা সম্ভবত আউটের আবেদন প্রত্যাহার করে নিতাম। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, বল খেলা হোক বা না হোক, সেটি ব্যাট এবং ব্যাটারের শরীরের মধ্যে কোথাও বা কোনও খেলোয়াড় বা আম্পায়ারের পোশাক, সরঞ্জামে আটকে গেলে ডেড বল হয়ে যায়।’’ ক্রিকেট মাঠে অস্ট্রেলীয়দের এমন সৌজন্য বিরল বলেই মনে করেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা।

এই ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের আচরণ এবং সৌজন্যে মুগ্ধ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারকে। বেডিংহ্যাম বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আমি খুশি। এই ব্যাপারটা নিয়ে যে কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি, সেটাই ইতিবাচক। সে সময় স্লিপের ফিল্ডারেরাই বলেছিল, ‘ভয় পেও না। বলটাকে ছেড়ে দাও।’ আসলে আমিই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।’’

টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ২১২ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস শেষ হয় ১৩৮ রানে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার রান ৮ উইকেটে ১৪৪। ২১৮ রানে এগিয়ে রয়েছেন কামিন্সেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.