সোনারপুরে বিজেপি কর্মীর উপরে হামলা, কোপানো হল স্ত্রী, পুত্রকেও! অভিযুক্ত তৃণমূল, এলাকায় উত্তেজনা

সোনারপুরে বিজেপি কর্মী এবং তাঁর স্ত্রী, পুত্রের উপরে হামলার অভিযোগ। শনিবার ভোররাতে তাঁদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। প্রথমে তিন জনকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এম আর বাঙুর হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁরা চিকিৎসাধীন। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঘটনাটি সোনারপুরের চৌহাটি এলাকার। সেখানকার বাসিন্দা গোবিন্দ অধিকারী। তিনি বিজেপি করেন বলে খবর স্থানীয় সূত্রে। এ বারের নির্বাচনে বিজেপির পোলিং এজেন্টও হয়েছিলেন গোবিন্দ। শনিবার ভোর ৩টের পর তাঁর বাড়িতে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে, তাঁর স্ত্রীকে এবং পুত্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। বাড়িতে গোবিন্দের কন্যাও ছিলেন। তবে তাঁর উপর হামলা হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবিন্দের স্ত্রী নমিতা অধিকারী এবং পুত্র গৌরব অধিকারী গুরুতর জখম।

পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আটক করা হয়েছে আক্রান্তদের প্রতিবেশী সুভাষ দেবনাথ এবং তাঁর পুত্র সুমিত দেবনাথকে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এটি পারিবারিক গোলমাল। কিছু দিন আগে কুকুর মারা নিয়ে এই দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার পর থেকেই তাঁদের মধ্যে তিক্ততা বৃদ্ধি পায়। শনিবারের হামলার সঙ্গেও সেই ঝামেলার যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবনাথ চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভোটের এক সপ্তাহ আগে একটি কুকুর নিয়ে দুই বাড়ির মধ্যে অশান্তি হয়েছিল। বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। ভোটে গোবিন্দ আমাদের দলের পোলিং এজেন্ট হয়েছিলেন। আমাদের ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়েও ছিল। যাঁরা গোবিন্দদের মেরেছেন, তাঁরা তৃণমূল করেন। অশান্তির সময়ে তাঁরা হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা তৃণমূল করি, আমরা দেখে নেব।’ বাইরে থেকে কয়েক জন এসেও হুমকি দিয়েছিলেন।’’

অভিযোগ উড়িয়ে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর রাজীব পুরোহিত বলেন, ‘‘একটি কুকুর মারাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছিল। সুভাষ দেবনাথের নামে গোবিন্দ অধিকারী মামলা করেছিল। সোনারপুর থানা বিষয়টি দেখেছে। শনিবার ভোরে আমার কাছে ফোন আসে, গোবিন্দ এবং তাঁর পরিবারকে চপার দিয়ে কোপানো হয়েছে বলে শুনি। কিন্তু এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের ওয়ার্ড শান্তিপূর্ণ। এখানে কোনও রাজনৈতিক ঝামেলা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই। আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করি। এটি দু’টি পরিবারের মধ্যে গোলমাল। পুলিশ যাঁকে আটক করেছে, যাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.