সন্দেশখালিতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন, ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল ঘুরে দেখছে গ্রাম

সন্দেশখালিতে পৌঁছল পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। ছ’জন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার সকালে সন্দেশখালিতে গিয়েছে। ঘুরে ঘুরে গ্রামগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে তারা।

গত কয়েক দিন ধরেই সন্দেশখালির পরিস্থিতি উত্তপ্ত। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ, শিবু হাজরাদের গ্রেফতারির দাবিতে গত সপ্তাহে পথে নেমেছিলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের বিরুদ্ধে এলাকায় অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সন্দেশখালিকে হাতিয়ার করে শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিরোধীদের উস্কানিতেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি। সেখানে ইতিমধ্যে রাজ্য মহিলা কমিশন গিয়েছে। এ বার পৌঁছল শিশু সুরক্ষা কমিশনও।

শনিবার সন্দেশখালিতে গিয়েছেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস, পরামর্শদাতা সুদেষ্ণা রায়-সহ মোট ছ’জন প্রতিনিধি। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিতে শিশুর উপর অত্যাচারের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। এক শিশুকে তার মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন পদক্ষেপ করে। শনিবার তারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছে।

সন্দেশখালি পৌঁছে সুদেষ্ণা জানান, গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে তাঁরা পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখবেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির কী অবস্থা, সবরকম পরিষেবা পরীক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে।

মায়ের কোল থেকে শিশুকে ছুড়ে ফেলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশকে চিঠিও দিয়েছে কমিশন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানান সুদেষ্ণা।

গত সোমবার সন্দেশখালিতে গিয়েছিল রাজ্য মহিলা কমিশের প্রতিনিধি দল। সেখানে মূলত মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। শাহজাহান, শিবুদের গ্রেফতারির দাবি জানিয়ে গত সপ্তাহে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মহিলারা। অভিযোগ, যখন তখন তাঁদের ডেকে পাঠান স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। তাঁদের কথা মেনে চলতে হয়। জোর করে কাজ করিয়ে নেওয়া হয় তাঁদের দিয়ে, কিন্তু প্রাপ্য পারিশ্রমিক মেলে না। এলাকায় জমি জবরদখলের অভিযোগও ওই নেতাদের বিরুদ্ধে তুলেছিলেন বিক্ষোভরত মহিলারা।

শুক্রবার সন্দেশখালিতে যেতে চেয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। তাদের সন্দেশখালির আগে রামপুরে আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভের পরেও সন্দেশখালি পৌঁছতে পারেননি বিজেপির কেউ। তাঁরা শেষমেশ কলকাতায় ফিরে যান এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে রিপোর্ট জমা দেন। একই দিনে সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তাঁকেও রামপুরেই পুলিশ আটকে দিয়েছে। সন্দেশখালির সংবেদনশীল এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.