রাতে কর্তব্যরত অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে ঝগড়া করছিলেন স্টেশন মাস্টার। সেই ঝগড়ার সময় মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল একটি শব্দ, ‘ওকে’। তার জেরে ভারতীয় রেলের ক্ষতি হয়েছিল তিন কোটি টাকা। অভিযোগ, স্টেশন মাস্টারের মুখে ওই ‘ওকে’ শব্দকে সবুজ সঙ্কেত ভেবে নেন লোকো পাইলট। তার পর যেখানে প্রবেশ করার কথা নয়, সেই মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় চালক রাতে মালগাড়ি নিয়ে চলে যান। তার জেরে কোনও দুর্ঘটনা হয়নি। তবে অভিযোগ, রেলের আইন লঙ্ঘিত হয় এবং আর্থিক ক্ষতি হয়। তার পরেই সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয় ওই স্টেশন মাস্টারকে। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদও হয় ওই ব্যক্তির।
অভিযুক্ত স্টেশন মাস্টার বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা। দুর্গের এক মহিলার সঙ্গে ২০১১ সালের ১২ অক্টোবর তাঁর বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পরেই নিজের প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন ওই মহিলা। সে কথা স্বামীর কাছে স্বীকারও করে নেন। তার জেরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা হত। স্টেশন মাস্টারের পরিবারের দাবি, স্বামীর উপস্থিতিতেই প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলতেন ওই মহিলা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক রাতে ওই স্টেশন মাস্টার যখন কর্তব্যরত ছিলেন, তখন তাঁকে ফোন করেন তাঁর স্ত্রী। তিনি বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘‘আমরা বাড়িতে এই নিয়ে কথা বলব, ওকে!’’ সেই সময় স্টেশন মাস্টারের মুখের কাছে মাইক্রোফোনটি অন করা ছিল। সেই ‘ওকে’ শব্দকে সবুজ সঙ্কেত মনে করেন মালগাড়ির চালক। তার পর রাতে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় মালগাড়ি নিয়ে চলে যান তিনি। কোনও দুর্ঘটনা হয়নি, তবে সূত্রের খবর, মালগাড়ি থেকে জিনিসপত্র লুটপাট হয়েছিল।
এ নিয়ে রেলের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। সেই রাতে ওই এলাকা দিয়ে মালগাড়ি চলার ফলে রেলের ক্ষতি হয়েছিল তিন কোটি টাকা। এর পরেই স্টেশন মাস্টারকে সাসপেন্ড করে রেল। ক্ষোভে, হতাশায় স্টেশন মাস্টার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে মামলা করেন। তাঁর স্ত্রী পাল্টা নির্যাতনের (৪৯৮এ) মামলা দায়ের করেন। শেষ পর্যন্ত ছত্তীসগঢ় হাই কোর্ট বিচ্ছেদের অনুমতি দেয়। সেই মামলার শুনানিতে উঠে এসেছে স্টেশন মাস্টারের ‘ভুলে’ রেলের আর্থিক ক্ষতির প্রসঙ্গ।