এ বারের আইপিএলে প্রথম চারে ওঠার লড়াই চলছে। ইতিমধ্যেই দু’টি দল প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়েছে। বাকি আটটি দলের মধ্যে কেউ এগিয়ে, কেউ পিছিয়ে। কোন চারটি দল প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে? বাকিরা কতটা পিছিয়ে? বিশ্লেষণ করল আনন্দবাজার ডট কম।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
একটা সময় লিগ তালিকায় সকলের নীচে ছিল মুম্বই। প্রথম পাঁচটি ম্যাচ শেষে পেয়েছিল মাত্র ২ পয়েন্ট। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দল। টানা ছ’টি ম্যাচ জিতে নিয়েছে। সব বিভাগে সাফল্য পেতে শুরু করেছে। ব্যাটারেরা রানে ফিরে এসেছেন, বোলারেরা উইকেট তুলছেন। পাঁচ বারের আইপিএলজয়ীর মতোই খেলছে মুম্বই। ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট (নেট রানরেট ১.২৭৪) নিয়ে শীর্ষে তারা। ম্যাচ বাকি রয়েছে গুজরাত টাইটান্স (৬ মে), পঞ্জাব কিংস (১১ মে) এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের (১৫ মে) বিরুদ্ধে। তিনটি দলই এ বারের আইপিএলে ফর্মে রয়েছে। দিল্লি শুরুটা ভাল করলেও এখন কিছুটা পিছিয়ে। তবে ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটার তাদের দলে রয়েছেন। গুজরাতও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। ফর্মে রয়েছে পঞ্জাবও। তাই শেষ তিনটি ম্যাচ জেতা মুম্বইয়ের জন্য খুব সহজ হবে না। কিন্তু রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পাণ্ড্য, যশপ্রীত বুমরাহ, ট্রেন্ট বোল্টেরা একসঙ্গে ফর্মে ফিরলে যে কোনও দলের ঘুম উড়ে যেতে পারে। মুম্বই এখন সেই ফর্মে রয়েছে। ফলে তারা প্লে-অফে যাচ্ছে বলাই যায়।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
এখনও পর্যন্ত এক বারও আইপিএল জেতেনি বেঙ্গালুরু। ১০টি ম্যাচে তারা ১৪ পয়েন্ট (নেট রানরেট ০.৫২১) পেয়েছে। এ বারের আইপিএলে শুরু থেকেই ফর্মে রয়েছে আরসিবি। ঘরের মাঠে তিনটি ম্যাচে হেরেছিল তারা। বাকি সব ম্যাচই জিতে নিয়েছে। শেষ তিনটি ম্যাচেই জিতেছে বেঙ্গালুরু। কিন্তু তাদের শেষ চারটি ম্যাচের মধ্যে তিনটিই ঘরের মাঠে। যা চিন্তায় রাখবে দলকে। ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরুকে খেলতে হবে চেন্নাই সুপার কিংস (৩ মে), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (১৩ মে) এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের (১৭ মে) বিরুদ্ধে। তিনটি দলই লিগ তালিকায় নীচের দিকে। ফলে কিছুটা সহজ হবে বেঙ্গালুরুর লড়াই। একটি ম্যাচ বাকি লখনউ সুপার জায়ান্টসের (৯ মে) বিরুদ্ধে। চারটি ম্যাচের মধ্যে দু’টি জিতলেই প্রথম চারে জায়গা পাকা করে ফেলতে পারবে তারা। প্লে-অফের দৌড়ে তারাও এগিয়ে।

পঞ্জাব কিংস
এখনও পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেলেছে পঞ্জাব। ১৩ পয়েন্ট (নেট রানরেট ০.১৯৯) পেয়েছে তারা। পঞ্জাবের ম্যাচ বাকি লখনউ (৪ মে), দিল্লি (৮ মে), মুম্বই (১১ মে) এবং রাজস্থানের (১৬ মে) বিরুদ্ধে। লিগ তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে তারা। তিনটি ম্যাচে হেরেছে। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছে। চারটি ম্যাচের মধ্যে তাদেরও অন্তত দু’টি ম্যাচ জিততে হবে। পঞ্জাব এখনও পর্যন্ত টানা তিনটি ম্যাচ জিততে পারেনি। ফলে বাকি চারটি ম্যাচে ধারাবাহিকতা দেখানো জরুরি। শ্রেয়স আয়ারেরা সেটা করতে না পারলে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হবে।
গুজরাত টাইটান্স
এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভাল জায়গায় গুজরাত। লিগ তালিকায় তারা চার নম্বরে থাকলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র ন’টি ম্যাচ খেলেছে তারা। তার মধ্যে ছ’টিতে জিতে নিয়েছে। আগামী পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে তিনটি জিততে হবে গুজরাতকে। ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেয়েছে তারা (নেট রানরেট ০.৭৪৮)। গুজরাতের ম্যাচ বাকি হায়দরাবাদ (২ মে), মুম্বই (৬ মে), দিল্লি (১১ মে), লখনউ (১৪ মে) এবং চেন্নাইয়ের (১৮ মে) বিরুদ্ধে। হাতে পাঁচটি ম্যাচ থাকায় প্লে-অফে ওঠার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিন্ত গুজরাত। তবে শুরুর দিকে পর পর ম্যাচ জিতলেও শেষ চারটি ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে হারতে হয়েছে। গুজরাত আগামী ম্যাচগুলিতে আবার শুরুর দিকের ফর্ম ফিরে পেতে চাইবে। গুজরাত প্লে-অফে উঠতে না পারলে অঘটনই বলতে হবে।
পিছিয়ে কারা?
চেন্নাই এবং রাজস্থান বিদায় নিয়েছে। দিল্লি, লখনউ কলকাতা এবং হায়দরাবাদের কিছুটা সুযোগ রয়েছে। তার মধ্যে দিল্লি ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। লখনউ ১০ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। এই দুই দলের প্রথম চারে ওঠার সুযোগ রয়েছে। দিল্লির ম্যাচ বাকি হায়দরাবাদ (৫ মে), পঞ্জাব (৮ মে), গুজরাত (১১ মে) এবং মুম্বইয়ের (১৫ মে) বিরুদ্ধে। তিনটি ম্যাচ জিতলে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির দিকে। চারটিতেই জিতে গেলে প্লে-অফের রাস্তা এক প্রকার নিশ্চিত।
লখনউয়ের ম্যাচ বাকি রয়েছে পঞ্জাব (৪ মে), বেঙ্গালুরু (৯ মে), গুজরাত (১৪ মে) এবং হায়দরাবাদের (১৮ মে) বিরুদ্ধে। তিনটি ম্যাচই শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে। ফলে লখনউয়ের পক্ষে প্লে-অফে ওঠার রাস্তা অনেকটাই কঠিন। চাপে রয়েছে কলকাতাও। রাজস্থান (৪ মে), চেন্নাই (৭ মে), হায়দরাবাদ (১০ মে) এবং বেঙ্গালুরুর (১৭ মে) বিরুদ্ধে ম্যাচ বাকি তাদের। সব ম্যাচ জিততে হবে তাদের। চেন্নাই এবং হায়দরাবাদ ম্যাচ তুলনামূলক সহজ। কিন্তু রাজস্থান এবং বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে কলকাতাকে।