নিউ গড়িয়ায় ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন, আঘাত করা হয় মাথাতেও! কী কী জানা গেল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে?

কর্মসূত্রে ছেলে ভিন্‌রাজ্যে। মেয়ে ভিন্‌দেশে। বাড়িতে থাকতেন বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী। নিউ গড়িয়ার বাড়িতে তাঁদের হাঁত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃদ্ধা অবশ্য তার আগেই মারা গিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মাথায় আঘাত করার সঙ্গে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে বছর ৭৯-র বিজয়া দাসকে।

শুক্রবার বৃদ্ধার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তা ছাড়া মাথাতেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, মারধরের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধার মুখে কাপড় জাতীয় কিছু চেপে ধরা হয়েছিল। তার ফলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত, দেহ উদ্ধারের অন্তত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা আগে মারা গিয়েছিলেন বিজয়া।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পঞ্চসায়র থানা এলাকায় নিউ গড়িয়া কোঅপারেটিভ এস-৩২ কুলু ভিলার বাসিন্দা বিজয়া এবং তাঁর স্বামী পিকে দাস। পুলিশকে ওই বাড়িতে কাজ করা পরিচারিকা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে তিনি কলিং বেল বাজান। কিন্তু বেশ কয়েক বার কলিং বেল বাজানোর পরেও দরজা খোলেননি বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা। তার পর তিনি ডাকাডাকি করেন। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। তিনি প্রতিবেশীদের জানান বিষয়টি। সেখান থেকে খবর যায় পঞ্চসায়র থানায়।

পুলিশ ওই বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা হাত বাঁধা অবস্থায় পড়ে। বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশ বুঝতে পারে অনেক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা। পরে সেখানে পৌঁছোন হোমিসাইড বিভাগের গোয়ান্দারা।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাড়িটিতে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু সেগুলোর তার কাটা ছিল। মনে করা হচ্ছে, অপরাধের আগে পরিকল্পনা করে ওই কাজ করেছিল আততায়ীরা। তা ছাড়াও বৃদ্ধ দম্পতির দেখাশোনার জন্য এক জন আয়া ছিলেন। দিন পাঁচেক হল তিনি কাজ করছেন। এই ঘটনায় তাঁর কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ওই আয়া বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে থাকতেন। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনারই বাসিন্দা। শুক্রবারও কাজে গিয়েছিলেন। ওই মহিলা দাবি করেছেন, ডাকাডাকি করে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার সাড়া না-পেয়ে তিনিই স্থানীয়দের জানিয়েছিলেন।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে বাড়ি লুট করতে গিয়ে খুন করা হয়েছে গৃহকর্ত্রীকে। বৃদ্ধার দেহ পাওয়া গিয়েছিল বাড়ির সিঁড়িতে। ঘরের ভিতরে তাঁর স্বামীকে পাওয়া যায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায়। অনুমান করা হচ্ছে, টাকা, গয়নাগাটি হাতানোর জন্যই এই ঘটনা। তবে এ পর্যন্ত কেউ আটক বা গ্রেফতার হননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.