ঊষার বিরুদ্ধে ‘থ্রেট কালচার’-এর অভিযোগ! ক্ষুব্ধ কর্তারা, ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার বৈঠকে উঠতে পারে ঝড়

প্যারিস অলিম্পিক্সের পর থেকে একের পর বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (আইওএ) প্রেসিডেন্ট পিটি ঊষা। সংস্থার কোষাধ্যক্ষ সহদেব যাদবের সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যা ঘিরে উত্তপ্ত হতে পারে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক। প্রাক্তন অ্যাথলিটের বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সহদেব। ঊষার বিরুদ্ধে আইওএতে ‘থ্রেট কালচার’ চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

সংস্থার দুই কর্তার বিরোধকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে। সহদেব-সহ একাধিক কর্তার অভিযোগ, ঊষা যে কারণ দর্শানোর (শো-কজ) নোটিস দিয়েছেন তা অবৈধ এবং হুমকিমূলক। সংস্থার কর্তাদের ভীতি প্রদর্শন করছেন প্রাক্তন অ্যাথলিট। বৈঠকে আইওএর সংবিধান অনুযায়ী সভাপতির এক্তিয়ার নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তাঁর আচরণ সম্পর্কে এথিক্স কমিটিতে যাওয়া নিয়েও কথা হতে পারে। গত অলিম্পিক্স-সহ বিভিন্ন সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচের অভিযোগও রয়েছে ঊষার বিরুদ্ধে। বৈঠকের চিঠিতে সই রয়েছে ১২ জন কর্তার। আইওএ সূত্রে খবর সিনিয়র সহ-সভাপতি অজয় পটেল, সহ-সভাপতি রাজলক্ষ্মী সিংহ দেও, সহ-সভাপতি এবং অলিম্পিক্স পদকজয়ী শুটার গগন নারাং, অন্যতম সদস্য এবং প্রাক্তন কুস্তিগির যোগেশ্বর দত্তও সভাপতির নানা কাজে ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত। ঊষার দাপটের বিরুদ্ধে জোট বদ্ধ হয়েছেন তাঁরা।

কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়ে ক্ষুব্ধ আইওএর কোষাধ্যক্ষ উষার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সহদেব সর্বভারতীয় ভারোত্তোলন ফেডারেশনেরও সভাপতি। তাঁর এবং আইওএর আরও কয়েক জন সদস্যের বিরুদ্ধে ঊষার অভিযোগ, তাঁরা বয়স এবং মেয়াদের নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যা জাতীয় ক্রীড়া কোড সম্মত নয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর সহদেব এবং অন্য অভিযুক্তদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে কারণ দর্শানোর নোটিস দেন ঊষা। জাতীয় ক্রীড়া কোড অনুযায়ী, কোনও ক্রীড়া কর্তা টানা ১২ বছরের বেশি পদে থাকতে পারবেন না। এই মেয়াদ শেষ হলে পদ থেকে সরে যাওয়া বাধ্যতামূলক। উল্লেখ্য, সহদেব আগে সর্বভারতীয় ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সচিব হিসাবেও কাজ করেছেন। তিনি টানা প্রায় ১৫ বছর ধরে বোর্ডে রয়েছেন। ঊষা তাঁর চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয় এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছেও পাঠিয়েছেন।

জবাবে গত ২৩ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে সহদেব জানিয়েছেন, ‘‘২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে আইওএর কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন হয়েছিল। এটা আপনার জানা। তাই আপনার এই বক্তব্য ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আপনাকে অনুরোধ, আমায়-সহ বেশ কিছু পদাধিকারী এবং এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের কয়েক জন সদস্যকে দেওয়া নোটিসটি প্রত্যাহার করে নিন। না হলে সমাজমাধ্যম, ক্রীড়া মন্ত্রক, আইওসি এবং জনমানসে আমার ভাবমূর্তির ক্ষতি করার জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’’ এর আগেও আইওএর বেশ কিছু কর্তা ঊষার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.