ডার্বি জয়ের পরেই আটকে গেল মোহনবাগান, সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে ড্র জামশেদপুরের সঙ্গে

গোটা ম্যাচে প্রচুর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারল না মোহনবাগান। ফলে শুক্রবার জামশেদপুরের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে আটকে গেল তারা। ১-১ অমীমাংসিত অবস্থায় শেষ হল ম্যাচ। শুভাশিস বসু মোহনবাগানকে এগিয়ে দিলেও স্টিফেন এজের গোলে সমতা ফেরায় জামশেদপুর। ড্র করেও শীর্ষে থাকল মোহনবাগান। ১৬ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩৬ পয়েন্ট হল তাদের। দু’য়ে উঠে এল জামশেদপুর। সমসংখ্যক ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৮।

মোহনবাগানের সুযোগ নষ্ট

জামশেদপুরের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে দাপিয়ে খেলেও একটির বেশি গোল করতে পারেনি মোহনবাগান। এর নেপথ্যে দলের ফুটবলারদের একের পর এক সুযোগ নষ্ট। প্রথমার্ধে যা সুযোগ পেয়েছিলেন তাতে হ্যাটট্রিক করে ফেলতে পারতেন জেমি ম্যাকলারেন। তবে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের মধ্যে গোলের স্বাভাবিক খিদে এ দিন দেখা যায়নি। অনেক সুযোগ নষ্ট করেছেন জেসন কামিংসও। মোহনবাগানের সাঁড়াশি চাপে প্রথমার্ধে খেলতেই পারেনি জামশেদপুর। পিছন দিকে পাস দিয়ে মোহনবাগানের ছন্দ নষ্ট করে দিতে চাইছিল তারা। সেই কৌশলে কিছুটা সফলও হয়। তার পরেও প্রচুর সুযোগ পেয়েছিল মোহনবাগান, যা কাজে লাগাতে পারলে প্রথমার্ধেই জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

আবার শুভাশিসের গোল

চলতি মরসুমে গোল করা প্রায় অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন মোহনবাগানের অধিনায়ক। এই নিয়ে পাঁচটি গোল হয়ে গেল তাঁর। তবে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে গোলের ক্ষেত্রে অনেকটাই অবদান টম অলড্রেডের। বক্সে ভেসে আসা ক্রস তিনিই হেড করে শুভাশিসের সামনে নামিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ক্রসে পা ছুঁইয়ে জটলার মধ্যে থেকে গোল করেন শুভাশিস। গোলের পর এক পা তুলে সেলিব্রেশন করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

মোহনবাগানের খারাপ গোল হজম

এ বার আটটি ক্লিন শিট রয়েছে মোহনবাগানের। নবমটি হয়ে যেত শুক্রবারই, যদি না খারাপ গোল হজম করতে হত। কী ভাবে স্টিফেন এজে নিজের অর্ধ থেকে বল নিয়ে প্রায় ৬০ গজ দৌড়ে শট করে গোল করে গেলেন তা নিয়ে চর্চা হতে পারে। মোহনবাগানের একের পর এক ফুটবলারকে অবলীলায় কাটালেন। সবুজ-মেরুনের কোনও ফুটবলার বাধা দিতেও এগিয়ে এলেন না। চেষ্টা করলে বক্সের আগেই আটকে দেওয়া যেত এজেকে। আপুইয়া সবচেয়ে কাছে ছিলেন। তিনি চেষ্টাই করেননি। বাধা দেননি আশিস রাইও।

আলবিনোর গোলকিপিং

মোহনবাগানের ড্রয়ের প্রথম কারণ যদি সুযোগ নষ্ট হয়, দ্বিতীয় কারণ নিঃসন্দেহে জামশেদপুরের গোলকিপারের পারফরম্যান্স। চলতি মরসুমে একাধিক বার ভাল খেলে নজর কেড়েছেন আলবিনো গোমস। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হল না। অন্তত গোটা তিনেক নিশ্চিত গোল বাঁচালেন তিনি। লিস্টন কোলাসো, ম্যাকলারেন, গ্রেগ স্টুয়ার্ট— সব মোহনবাগান ফুটবলারের শট আটকে দিলেন তিনি। শেষ দিকে মোহনবাগান চেপে ধরার সময়েও ঘাবড়ে যাননি। আত্মবিশ্বাস নিয়ে একের পর এক শট আটকেছেন।

দ্বিতীয়ার্ধে জামশেদপুরের উজ্জীবিত পারফরম্যান্স

প্রথমার্ধে জামশেদপুরকে যথেষ্ট শ্লথ লেগেছে। খালিদ জামিলের দল মোহনবাগানের গতির সঙ্গে পাল্লাই দিতে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে জেভিয়ার সিভেরিয়ো এবং সেমিলেন ডাঙ্গেল নামার পর তাদের চেহারা পাল্টে যায়। পাল্টা আগ্রাসী হয়ে ওঠে তারা। সেই ঝড় সামলাতে পারেনি মোহনবাগান। চাপের মুখে গোল খেয়ে বসে তারা। ভাগ্য সহায় থাকলে আরও গোল করতে পারত জামশেদপুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.