ফের ভারতের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলল পাকিস্তান। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের নয়া দাবি, ভারতের হাতের পুতুল আফগানিস্তান! তুরস্কে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্যও নয়াদিল্লিকে দায়ী করলেন তিনি। দাবি করেছেন, আলোচনায় দু’পক্ষ (পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান) অধিকাংশ ক্ষেত্রে একমত হলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসছে কাবুল। ভারতের মদতেই আফগানিস্তানের তালিবান সরকার এই কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
মঙ্গলবার পাক সংবাদমাধ্যম ‘জিও নিউজ়’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “কাবুলের মানুষ নয়াদিল্লির মদতে পুতুলনাচ নাচছেন।” আফগানিস্তানকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় যুদ্ধ করছে বলেও দাবি করেছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পাশাপাশি আফগানিস্তানকেও হুঁশিয়ারি় দিয়েছেন তিনি। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “যদি ওরা ইসলামাবাদের দিকে চোখ তুলে তাকায়, তা হলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে।’’
পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি। আফগানিস্তানে যে তালিবান ক্ষমতাসীন, তাদেরই একটি শাখা পাকিস্তানি তালিবান। ইসলামাবাদের দাবি, আফগানিস্তান এবং ভারতের মদতে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায়। কাবুল এবং নয়াদিল্লি বার বার এই দাবি অস্বীকার করেছে। চলতি মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে পাকিস্তানি সেনার যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, তার নেপথ্যেও ছিল এই গোষ্ঠী।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলা এবং তার পরবর্তী সময়ে তালিবান সরকারের জবাব দুই দেশের সীমান্তকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে। গত ১৮ অক্টোবর কাতারের রাজধানী দোহাতে প্রথম দফার বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। ওই বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন আফগানিস্তান ও পাকিস্তান দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলবি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ ও খোয়াজা আসিফ। তবে দীর্ঘ বৈঠকের পরেও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারেনি কাবুল এবং ইসলামাবাদ।
সীমান্ত এলাকায় শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত শনিবার থেকে তুরস্কে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। ওই বৈঠকে মধ্যস্থতা করে তুরস্ক এবং কাতার। কিন্তু সেই বৈঠকেও কোনও রফাসূত্র মেলেনি। আর এই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার জন্য ভারতের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলল পাকিস্তান।

