কলকাতায় হাজির নড্ডার পাঠানো বিজেপির চার সাংসদের দল! সোমবার সকালে যাবে কোচবিহারে

রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করে তুলেছে বিজেপি। এর মধ্যেই রবিবার রাতে কলকাতায় পৌঁছল বিজেপির চার সাংসদের বিশেষ কমিটি।

রবিবার রাত ৮টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে ওই কমিটির সদস্যদের অভ্যর্থনা জানান বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। সেখান থেকে তাঁরা সোজা চলে যান মাহেশ্বরী ভবনে, যেখানে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ আনা আশ্রিতদের রাখা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই এই কমিটি তৈরি করেছেন কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। কমিটিতে রয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি তথা বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজলাল এবং মধ্যপ্রদেশের রাজ্যসভা সাংসদ কবিতা পাতিদার। বিজেপি সূত্রে খবর, রবিবার রাতটুকু কলকাতায় কাটিয়ে তাঁরা সোমবার সকালেই রওনা হবেন কোচবিহারের উদ্দেশে।

কোচবিহারে তৃণমূলের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার কাছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক পরাজিত হওয়ার পর থেকেই এলাকায় ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই কোচবিহারে গিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত অভিযোগের কথা জেনে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পরে রবিবার ‘আক্রান্ত’দের নিয়ে তিনি রাজভবনে যান। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কোচবিহারে পৌঁছবে বিজেপির চার সাংসদের প্রতিনিধি দলও।

তবে বিজেপির এই প্রতিনিধিদের রাজ্যে আসার পর প্রথমে দক্ষিণের জেলাাগুলির পরিস্থিতিই ঘুরে দেখার কথা ছিল। রবিবার কলকাতায় আসার পরে সোমবার তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল ডায়মন্ড হারবারে। কিন্তু সোমবার ইদের উৎসব হওয়ায় তাঁরা সেখানে না গিয়ে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

রবিবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে  (বাঁ দিক থেকে) কবিতা পাতিদার, রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং বিপ্লব দেব।

বিজেপি সূত্রে খবর, সকালের বিমানে কোচবিহারে গেলেও রাতেই আবার কলকাতায় ফিরবেন চার সাংসদ। পরের দিন তাঁরা ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর এবং বসিরহাট লোকসভা এলাকায় ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন।

শনিবারই একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে এই প্রতিনিধি দলের বাংলায় আসার খবর দিয়েছিল বিজেপি। কারা সেই প্রতিনিধি দলে থাকছেন, তা জানিয়ে বিজেপি লিখেছিল, ‘‘গোটা দেশে এ বার লোকসভা ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে। ২৮টি রাজ্য এবং আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে লোকসভা ভোট ছাড়াও চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটিতে ক্ষমতার বদলও হয়েছে। অথচ কোথাও কোনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। হয়েছে শুধুমাত্র বাংলায়।’’

বিজেপি এ-ও লিখেছিল যে, ‘‘লোকসভা ভোটের পরে রাজ্যে যে ভোট পরবর্তী হিংসা চলছে, তাতে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার ছায়া দেখা যাচ্ছে। আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব দেখেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। অথচ তাঁরই দলের দুষ্কৃতীরা বিরোধী দলের কর্মী এবং ভোটারদের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।’’ তাই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিতেই নড্ডার নির্দেশে ওই প্রতিনিধি দল বাংলায় আসবে বলে জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। বাংলা সফর সেরে তাঁরা বিস্তারিত রিপোর্ট দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.