নানা জল্পনার মধ্যেই রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। তার মধ্যে ফোরডোর মাটির নীচের পরমাণুকেন্দ্রটিতে অন্তত ছ’টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছে বলে দাবি। ঘটনাচক্রে, আমেরিকার হামলার ঠিক আগেই কিছু তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ইরানের ফোরডোর ওই পরমাণুকেন্দ্রে। প্রকাশ্যে এল তারই উপগ্রহচিত্র।
স্যাটেলাইট সংস্থা ‘ম্যাকসার’-এর এক বিশেষজ্ঞকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানিয়েছে, আমেরিকার হামলার দু’দিন আগেই কিছু অস্বাভাবিক তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রে। পরমাণুকেন্দ্রটির যে জায়গায় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, সেই রাস্তায় ১৬টি মালবাহী ট্রাক দেখা গিয়েছিল গত ১৯ জুন।
পরের দিনের উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি ট্রাক উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও এক কিলোমিটার মতো সরে গিয়েছে। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি ট্রাক এবং বুলডোজ়ার দেখা গিয়েছে পরমাণুকেন্দ্রে ঢোকার মুখে।
উপগ্রহচিত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, আমেরিকা হামলা চালাতে পারে ভেবেই কি পরমাণু প্রকল্পের জন্য জরুরি সরঞ্জাম সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইরান? কেউ কেউ মনে করছেন, ইরান তাদের পরমাণু প্রকল্পের সরঞ্জাম যাতে কোনও অজ্ঞাত জায়গায় সরিয়ে ফেলতে না পারে, তাই দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেই আচমকা ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এই দাবির আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি আমেরিকা বা ইরানের পক্ষ থেকে।
রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময়) ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের নাতানজ়, ফোরডো এবং ইসফাহান পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলা চালাতে ‘বাঙ্কার বাস্টার’ এবং ‘বি ২ বম্বার’ ব্যবহার করা হয়েছে। রয়টার্স-এর প্রতিবেদন বলছে, ইরানের ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রে ছ’টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছে। ‘জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ (এমওপি) নামেও পরিচিত এই বোমা। তা ফেলার জন্য বি ২ স্পিরিট বোমারু বিমানকে ব্যবহার করেছে আমেরিকা, যে বিমান ১৫ টন ওজনের বোমা বহনে সক্ষম।
ইরানে হামলা চালাতে এই দু’টি ঘাতক অস্ত্রের ব্যবহারে উল্লসিত ট্রাম্প। হামলার সেই মুহূর্তকে তিনি আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি এই বার্তাও দিতে চেয়েছেন যে, প্রয়োজনে এই হামলার তেজ আরও বাড়াতে প্রস্তুত আমেরিকা। শুধু ‘বাঙ্কার বাস্টার’ই নয়, আমেরিকার নৌবাহিনীও টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানের দু’টি পরমাণু কেন্দ্র নাতানজ় এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে বলে সাংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।