শিক্ষকের হাতে চড় খেয়ে পিস্তল বার করে তাঁকে ‘ভয় দেখাতে’ গেল দশম শ্রেণির এক ছাত্র। সহপাঠীরা চেষ্টা করেও নিরস্ত্র করতে পারেনি বছর ষোলোর ছেলেটিকে। শেষমেশ এক সিভিক ভলান্টিয়ার গিয়ে পিস্তল ছাড়িয়ে নেন তাঁর হাত থেকে। এ নিয়ে সোমবার থেকে শোরগোল ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের চোরচিতা চৌরেশ্বর হাই স্কুলে দশম শ্রেণির এক ছাত্র ক্লাসে বসে দুষ্টুমি করায় তাকে চড় মেরেছিলেন ইতিহাসের শিক্ষক। ওই শিক্ষক জানান, লাস্ট বেঞ্চে বসেছিল সেই পড়ুয়া। দুষ্টুমি করায় তাকে শাসন করেন। ক্লাস শেষ হয়। তিনি টিচার্স রুমে চলে যান।
অন্য দিকে, শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে ওই ছাত্রটিও প্রধানশিক্ষকের কাছে যায় ইতিহাসের শিক্ষকের নামে অভিযোগ জানাতে। ওই সময় প্রধানশিক্ষক কোনও কাজে বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে যায় ছাত্রটি।
এর পর টিফিনের সময় প্রধানশিক্ষকের ঘরে বসেছিলেন কয়েক জন সহকারি শিক্ষক। সেই সময় তাঁদের চোখ যায় সামনের জানলার দিকে। প্রথমে নিজেদের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারেননি তাঁরা। এক শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘এক ছাত্রের হাত থেকে পিস্তল কাড়ার চেষ্টা করছিল তিন-চার জন ছাত্র। সেই সময় স্কুলের বাইর থেকে এক সিভিক ভলান্টিয়ার ছুটে আসেন। তিনি ওই ছাত্রের হাত থেকে পিস্তল কেড়ে নেন।’’
খবর যায় পুলিশের কাছে। কিছু ক্ষণের মধ্যে বেলিয়াবেড়া থানার ওসি ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাক্রমে ইতিহাসের শিক্ষক থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। স্কুলের প্রধানশিক্ষক অন্তর্যামী রানা বলেন, ‘‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই ছাত্র সেটা কোথা থেকে পেল, সে নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। তবে পিস্তলটিতে গুলি ভরা ছিল না। শিক্ষককে গুলি করার চেষ্টার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয় সোমবার। মঙ্গলবার ছাত্রটিকে হাজির করানো হয় ঝাড়গ্রাম জুভেনাইল বোর্ডে। বিচারক ছাত্রটিকে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের একটি হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ছাত্রের বাবার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভালয় ভালয় ক্লাস হয়েছে স্কুলে। তার মধ্যে পরিচালন সমিতির বৈঠক হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।