Pahalgaon Terror Attack: বিরাট সাফল্য! পহেলগাঁওয়ের নৃশংস জঙ্গিরা আশ্রয় পেয়েছিল যার মদতে, অবশেষে জালে সেই কালপ্রিট…

বড়সড় সাফল্য পেল জম্মু-কাশ্মীর পুলিস (Jammu Kashmir Police)।  গ্রেফতার (Arrest) পহেলগাম হামলায় (Pahalgam Attack) সব জঙ্গিদের সাহায্য করা যুবক। তার নাম মহম্মদ কাটারিয়া (Mohammad Kataria) বলে জানা গেছে। জঙ্গিদের লজিস্টিক সাপোর্ট (Logistic Support) দিয়েছিল সে। অভিযুক্তকে বুধবারই গ্রেফতার করেছে পুলিস। চলতি বছর ২২ এপ্রিলের পহেলগাঁওয়ের ওই নৃশংস হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।

কে এই কাটারিয়া?

কাটারিয়ার নাম উঠে আসে জুলাই মাসে পরিচালিত অপারেশন মহাদেব (Operation Mahadev) -এর সময় উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও সরঞ্জামের ফরেনসিক বিশ্লেষণে। অস্ত্রগুলো চণ্ডীগড়ের ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেগুলোই পহেলগাঁও হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে জানান, ‘এই রাইফেলগুলো থেকে গুলি ছুঁড়ে খালি শেল সংগ্রহ করে পাহালগামের ঘটনাস্থলে পাওয়া শেলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে।’

পহেলগাঁও হামলার পর উপত্যকা জুড়ে একাধিক অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা (Indian Army)। গত জুলাই মাসে হওয়া ‘অপারেশন মহাদেব’ (Operation Mahadev) তেমনই এক অভিযান। তাতে উদ্ধার হয়েছিল বিপুল অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি। সেগুলির ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই ধরা পড়ে কাটারিয়া। তাকে শিগগিরই আদালতে পেশ করে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হবে।

এই গ্রেফতারিকে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্যতম বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই বলেছিল, পহেলগাম হামলায় যুক্ত প্রত্যেককে খুঁজে বের করাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)।

এর আগে অবশ্য এই সংগঠনকে অর্থ জোগানো ও তাদের প্রচারের অভিযোগে গ্রেফতার দুই অভিযুক্ত জামিন পান। জম্মুর বিশেষ NIA আদালত জানায়, তদন্তকারী সংস্থা ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দাখিল না করায় (NIA failed to Submit Chargesheet) অভিযুক্তদের আইনি অধিকার (legal right) অনুযায়ী জামিন দিতে বাধ্য হয়েছে আদালত।

শ্রীনগরের বাসিন্দা ইয়াসির হায়াত বৃহস্পতিবার এবং হান্ডওয়ারার বাসিন্দা শফাত ওয়ানি জামিন পান। TRF-র অর্থ সংগ্রহ ও প্রচারের অভিযোগে এপ্রিল ও মে মাসে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

‘অপারেশন মহাদেব’

গত মে সেনার কাছে খবর আসে, শ্রীনগরের কাছে দাচিগামে জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ নজরদারি চালানো হয়। সেনার হাতে আসে চিনা এনক্রিপটেড কমিউনিকেশন ডিভাইসের হদিশ। অবশেষে জুলাইয়ে শুরু হয় অভিযান। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় তিন লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি।

  • মে ২২ থেকে শুরু হয়ে জুলাই ২৮ পর্যন্ত চলে এই অভিযান।
  • সন্ত্রাসীরা T82 কমিউনিকেশন ডিভাইস ব্যবহার করলে ভারতীয় বাহিনী তাদের অবস্থান শনাক্ত করে।
  • সকাল ৮টায় ড্রোনের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল কনফার্মেশন হয়, ৯.৩০টায় সেনা ও কমান্ডো দল অভিযান শুরু করে।
  • দুপুর ১২.৪৫-এর মধ্যে তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়, যার মধ্যে ছিল হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সুলেমান শাহ ওরফে হাশিম মুসা

নিহত জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের জারি করা দু’টি ল্যামিনেটেড ভোটার আইডি কার্ড। একটির মালিক সুলেমান শাহ, যার নাম লাহোর (NA-125) কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় রয়েছে। অন্যজন আবু হামজা, যিনি গুজরানওয়ালা (NA-79) কেন্দ্রের ভোটার।

কে এই সুলেমান শাহ?

পাকিস্তান সেনার বিশেষ বাহিনী এসএসজি-র প্রাক্তন কমান্ডো ছিল শাহ। পরে হাফিজ সইদের নেতৃত্বাধীন লস্কর-ই-তইবা যোগ দেয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার ভারতে অনুপ্রবেশ করে সে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার নেতৃত্বে এক হামলায় সাতজন সাধারণ নাগরিক নিহত হন। বারামুলায় আরেক হামলায় চার নিরাপত্তারক্ষীর প্রাণ যায়।

অপারেশন সিন্দুর ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া:

  • হামলার পর ভারত ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত করে এবং অপারেশন সিন্দুর নামে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালায়।
  • পাকিস্তান পাল্টা ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায়, যা ভারতীয় বাহিনী প্রতিহত করে।
  • ১০০ ঘণ্টার সংঘাতের পর পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির আবেদন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.