রবিবার ছত্তীসগঢ় সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই এই রাজ্যের বিজাপুর জেলায় একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করলেন ৫০ জন মাওবাদী। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এই ৫০ জনের মধ্যে ১৪ জনের মোট মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ৬৮ লক্ষ টাকা! রবিবার দুপুরে রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশবাহিনীর (সিআরপিএফ) ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সামনে অস্ত্র সমর্পণ করেছেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এঁদের সকলেই ‘অন্তঃসারশূন্য এবং অমানবিক মাওবাদী রাজনীতি, নিষিদ্ধ ঘোষিত সিপিআই (মাওবাদী) নেতাদের দ্বারা আদিবাসীদের শোষণ এবং আন্দোলন নিয়ে মতপার্থক্যের’ কারণ দেখিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। বিজাপুরের এসএসপি জিতেন্দ্রকুমার যাদব আরও বলেন, ‘‘এর পাশাপাশি, মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর ছাউনি স্থাপন এবং ‘নিয়া নেল্লানার’ (আপনার ভাল গ্রাম) প্রকল্পের অধীনে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রশাসনের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানেরও প্রশংসা করেছেন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা। তবে এই আত্মসমর্পণের নেপথ্যে জেলা রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি), বস্তার ফাইটার্স, স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ), সিআরপিএফ এবং ‘কোবরা’ ইউনিটেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।’’
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী ৫০ জনের মধ্যে ছ’জনের প্রত্যেকের মাথার দাম আট লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। তিন জনের মাথার দাম ছিল পাঁচ লক্ষ টাকা করে। এ ছাড়াও, পাঁচ জনের মাথার দাম ছিল এক লক্ষ টাকা করে। সব মিলিয়ে ১৪ জনের মাথার দাম ছিল মোট ৬৮ লক্ষ টাকা। অস্ত্র ফিরিয়ে মূলধারায় ফেরার জন্য সরকারের নীতি অনুযায়ী তাঁদের সকলেরই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।
শনিবারই ছত্তীসগঢ়ের সুকমা এবং বস্তারে জোড়া সংঘর্ষের ঘটনায় ১১ জন মহিলা-সহ মোট ১৮ জন মাওবাদী নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও। ওই ঘটনার পরেই নিরাপত্তাবাহিনীর সাফল্যের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রসঙ্গত, রবিবার ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ৩৩৭০০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা তাঁর। মোদীর সফরের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই আত্মসমর্পণ করলেন মাওবাদীরা।