সন্তানের মঙ্গলকামনায় জলে নেমে বিহারে তলিয়ে গেলেন ৩৬ শিশু-সহ ৪৬ জন, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা নীতীশের

সন্তানের মঙ্গলকামনায় তাকে নিয়েই জলাশয়ে ডুব দেন মা। বিহারে এই রীতি পালন করতে নেমে বুধবার থেকে প্রায় ১৫টি জেলায় ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতদের মধ্যে ৩৭ জন শিশু রয়েছে। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। মৃতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

বিহারে সন্তানের মঙ্গলকামনায় ‘জিতিয়া’ বা ‘জীবিতপুত্রিকা’ রীতি পালন করেন মায়েরা। জলাশয়ে নেমে সন্তানের দীর্ঘায়ু কামনা করেন তাঁরা। সে কারণে রাজ্যের নদী, পুকুর-সহ সব জলাশয়ে থাকে মহিলা এবং শিশুদের ভিড়। এই রীতি পালন করতে গিয়ে বুধবার থেকে বিহারের পূর্ব এবং পশ্চিম চম্পারণ, অওরঙ্গাবাদ, কাইমুর, বক্সার, সিওয়ান, রোহতাস, সারণ, পটনা, বৈশালী, মুজফ্‌ফরপুর, সমস্তিপুর, গোপালগঞ্জ এবং আরওয়াল জেলায় ডুবে গিয়েছেন ৪৬ জন। এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাত মহিলা এবং ৩৬ শিশু। তিন জনের এখনও খোঁজ মেলেনি। বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘৪৩ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আট জনের পরিবার ইতিমধ্যে টাকা পেয়ে গিয়েছে।’’

বুধবার থেকে রাজ্যের নদী, জলাশয়গুলিতে উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এখনও খোঁজ চলছে। মনে করা হচ্ছে, ভিড়ের কারণে বহু শিশু মায়ের হাতছাড়া হয়ে ডুবে গিয়েছে। তা ছাড়া বৃষ্টির কারণে নদী, পুকুরে জলও খুব বেশি ছিল। অনেকেই সামলাতে না পেরে ডুবে গিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অওরঙ্গাবাদ জেলায় ডুবে মৃত্যু হয়েছে আট শিশুর। জেলাশাসক শ্রীকান্ত শাস্ত্রী জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে জলাশয়ে ডুব দিতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছে ওই শিশুরা। কায়মিরে দুর্গাবতী নদীতে মায়ের সঙ্গে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছে সাত শিশু। পটনার গ্রামীণ এলাকায় তলিয়ে গিয়েছে চার শিশু। এই নিয়ে আঙুল উঠেছে প্রশাসনের দিকেও। কেন নদী, জলাশয়গুলির আশপাশে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.