ইম্ফলে জ্বালিয়ে দেওয়া হল ১৫টি বাড়ি, গুলিতে আহত এক, শনিবার রাত থেকে নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর

বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুরের পর এ বার ইম্ফল পশ্চিম জেলা। শনিবার রাত থেকে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে হিংসাকবলিত মণিপুরের এই জেলায়। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় উন্মত্ত জনতা লাংগল গ্রামে ঢুকে ১৫টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এলোপাথাড়ি গুলিও ছোড়ে তারা। পায়ে গুলি লেগে এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় নিরাপত্তা বাহিনী। রবিবার সকালে ইম্ফল পশ্চিমের পরিস্থিতি শান্ত বলে জানা গিয়েছে। তবে ওই এলাকায় প্রচুর পুলিশ এবং আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবারও কার্ফু জারি রয়েছে ওই এলাকায়। শনিবার দুপুরের দিকে উত্তেজনা ছড়ায় ইম্ফল পূর্ব জেলাতেও। সেখানকার চেকন এলাকায় একটি বড় বাণিজ্যিক ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এখানেও এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

শনিবার একটি সংগঠন ইম্ফলের দুই জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। ওই সংগঠনের মিছিলের জেরে দৈনন্দিন কাজকর্ম প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার রাতে মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার মেইতেই অধ্যুষিত কাওয়াকটা এলাকায় সশস্ত্র কুকি জঙ্গিদের হামলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পাল্টা হামলায় ওই এলাকায় কুকিদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.