অপহৃত ট্রেনের কাছে পৌঁছল পাক সেনা, বালুচিস্তানে গুলির লড়াই, শতাধিক পণবন্দির প্রাণসংশয়

সশস্ত্র বালুচ বিদ্রোহীদের অপহরণ করা ট্রেনের কাছে পৌঁছে গিয়েছে পাক নিরাপত্তাবাহিনী। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে ধারাবাহিক ভাবে গুলির আওয়াজ আসতে শুরু করেছে বলেও সে দেশের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র বালুচ গোষ্ঠী বিএলএ (বালুচ লিবারেশন আর্মি)-র হাতে অপহৃত শতাধিক রেলযাত্রীর প্রাণসংশয় হতে পারে বলে আশঙ্কা। কারণ, সেনা অভিযান বন্ধ না করলে পণবন্দিদের খুন করার হুমকি দিয়েছে বিএলএ।

বালুচিস্তান প্রাদেশিক সরকার মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছে, ‘উদ্ধারকারী দল’ (মনে করা হচ্ছে, যাঁদের মধ্যে পাক সেনার ‘স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ’-এর কমান্ডোরা রয়েছেন) ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। পাক সেনার দাবি, অন্তত ১৮২ জনকে পণবন্দি করেছেন বালুচ বিদ্রোহীরা। ট্রেনের যাত্রী ২০ জন সেনা ও আধাসেনাকে খুনও করেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসকে মঙ্গলবার দখল করেন বিএলএ বিদ্রোহীরা।

পাক রেল দফতরের আধিকারিক মহম্মদ কাশিফ জানিয়েছেন, ন’টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি পণবন্দি হয়েছেন। বিএলএর তরফেও ঘটনার দায় স্বীকার করে শতাধিক যাত্রীকে পণবন্দি করার কথা জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ট্রেনের আরোহী অন্তত ছ’জন পাক সেনাকর্মী বালুচ বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন! গুলিতে জখম হয়েছেন ট্রেনের চালকও। ওই ট্রেনে বালুচিস্তানে কর্মরত সেনা এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনীর সদস্যেরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। তাই সেটি বালুচ বিদ্রোহীদের নিশানা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

উদ্ধারকারী সেনাদের আটকাতে রেললাইনের একাংশ উড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্রোহী বালুচ যোদ্ধারা। বালুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ বলেন, ‘‘কাচ্চি বোলান জেলায় পেহরো কুনরি এবং গাদালারের মাঝামাঝি জায়গায় যাত্রিবাহী ট্রেনটি অপহরণ করা হয়।’’ এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছু়ড়তে সশস্ত্র বালুচ বিদ্রোহীরা ট্রেনের দখল নেন বলে তাঁর অভিযোগ। ঝটিতি কমান্ডো হানা ঠেকাতে পাহাড়ঘেরা ওই রেলপথের ৮ নম্বর সুড়ঙ্গের ভিতরে অপহৃত ট্রেনটিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ট্রেনে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরকও বসিয়েছেন তাঁরা। কাচ্চি বোলানের জেলা পুলিশ সুপার ওই এলাকার অদূরে ৬৫ নম্বর জাতীয় সড়কেও বালুচ বিদ্রোহীরা হানা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তাবাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.