তৃণমূলের হয়ে বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌসের প্রচার নিয়ে যখন ঢাকা-দিল্লি তোলপাড়, তখন আরও এক বাংলাদেশি অভিনেতার প্রচারের ছবি সামনে এসে গেল। সেটাও তৃণমূলের হয়েই। বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত জনপ্রিয় মেগা সিরিয়াল রানি রাসমণি-র নায়ক চরিত্রের অভিনেতা গাজি নুরকে দেখা গেল তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের সঙ্গে কামারহাটিতে প্রচারে। দমদম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের হয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন তিনি।
ফিরদৌসকে কালো তালিকায় ফেলে দিয়েছে ভারত সরকারের বিদেশমন্ত্রক। নোটিস দিয়ে বলে দিয়েছে ঢাকায় ফিরে যেতে। এরই মধ্যে নুরের এমন ছবি অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বাংলার শাসক দল এবং স্বয়ং অভিনেতাকে। দ্য ওয়াল-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল নুরের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনাটি কয়েকদিন আগের। তাঁর কথায়, “মদনদার সঙ্গে আমার অনেক দিনের সম্পর্ক। আমার মায়ের অসুস্থতার সময় দাদা অনেক সাহায্য করেছিলেন।” কিন্তু রাসমণিতে রাজচন্দ্র দাসের চরিত্রে অভিনয় করা বাংলাদেশের নাগরিক গাজি আবদুন নুর জানিয়েছেন, “আমি দক্ষিণেশ্বরে গিয়েছিলাম। তখন মদনদার বাড়িতে যাই। দাদা বলেন, একটা কাজ আছে। সেরে তোকে নামিয়ে দেব। তারপর দেখি নির্বাচনের প্রচারে নিয়ে গিয়েছেন।” নুর বলেন, “আমি জানতাম না ভোটের প্রচারে যাচ্ছেন দাদা। এখন আমায় প্রমাণ করতে হবে যে আমি যাইনি। কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়। হাজার হাজার ছবি ও ভিডিয়ো আছে। কিন্তু আমি এটুকু বলতে পারি, আমি শুধু দাদার সঙ্গে গাড়িতে ছিলাম। কাউকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাইনি।”
বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে ফিরদৌস কী ভাবে ভারতে এসে নির্বাচনে প্রচার করেন, এই প্রশ্ন তুলে কমিশনে গিয়েছিল বিজেপি। পয়লা বৈশাখের দিনই টলিউডের অন্য দুই অভিনেতা পায়েল এবং অঙ্কুশের সঙ্গে ফিরদৌসকে দেখা যায় রায়গঞ্জে কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে রোড শো করছেন। এরপরই হইহই পড়ে যায়। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে বিদেশমন্ত্রক।
নুরকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার ক্ষেত্রেও যদি একই পদক্ষেপ করে তাহলে? গোটা ব্যাপারটায় আতঙ্কিত নুর বলেন, “আমি ভারতের আইনকে সম্মান করি। আমি এই দেশের কাছে কৃতজ্ঞ। কত মানুষকে এই দেশ আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু আমি আবার বলছি, আমি জেনে যাইনি যে নির্বাচনের প্রচার।” গোটা ঘটনায় ভাঁজ পড়ে গিয়েছে টিম রানি রাসমণির কপালেও। ফিরদৌসের মতো যদি তাকেও ব্ল্যাক লিস্টেড করে দেয় বিদেশমন্ত্রক, তাহলে কী হবে? এখন দেখার নুরের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ হয়।