সংশোধিত ওয়াকফ আইনে আংশিক স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট, কী কী পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের, রইল সবিস্তার

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের উপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী রায় দিয়ে জানিয়েছে, ওই আইনের সব ধারা সম্পূর্ণ ভাবে স্থগিত করার কোনও যুক্তি নেই। এ ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোনও আইনকে সহজে অসাংবিধানিক বলা যায় না। সংসদ যা বানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে তা বৈধ ধরে নিতে হবে। তবে ওই আইনের দু’টি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। সংশোধিত আইনের ওই দু’টি ধারা আপাতত স্থগিত রাখতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

কোন দু’টি ধারা আপাতত স্থগিত রইল

এক, সংশোধিত আইনে বলা হয়েছিল, কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ না কি সরকারি, তা জেলাশাসক বা সম পদমর্যাদার কোনও আধিকারিক ঠিক করতে পারেন। আদালত মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত জেলাশাসক নিতে পারেন না। এটা আদালতের কাজ। তাই আইনের ওই ধারাটি স্থগিত রেখেছে প্রধান বিচারপতি গবই এবং বিচারপতি জর্জ অগাস্টিন মসিহ-এর বেঞ্চ।

দুই, সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, যিনি ওয়াকফে দান করবেন, তাঁকে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করার প্রমাণ দিতে হবে। কিন্তু এটি কার্যকর করার কোনও নিয়ম সরকার বানায়নি। তাই এই ধারাও আপাতত স্থগিত থাকবে।

সুপ্রিম কোর্ট সংশোধিত আইনের কোন কোন অংশ বহাল রাখল

এক, দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহার করলেই সম্পত্তি ওয়াকফ নয়।

দুই, অমুসলিমরা ওয়াকফে সম্পত্তি দান করতে পারবেন না।

তিন, সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।

চার, আদিবাসীদের জমি ওয়াকফে দেওয়া যাবে না।

পাঁচ, ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে মামলা করার ক্ষেত্রে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া।

সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ

এক, কোনো ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত চলাকালীন (অনুচ্ছেদ তিন সি অনুসারে) ওয়াকফকে সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।

দুই, রাজস্ব রেকর্ড বা বোর্ডের রেকর্ডে পরিবর্তন আনা যাবে না।

তিন, চূড়ান্ত ভাবে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত না-হওয়া পর্যন্ত কোনো তৃতীয় পক্ষের অধিকার তৈরি হবে না।

চার, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে (অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী) সর্বোচ্চ চার জন অমুসলিম সদস্য থাকতে পারবেন (মোট ২২ জনের মধ্যে)।

পাঁচ, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে (অনুচ্ছেদ ১৪ অনুযায়ী) সর্বোচ্চ তিন জন অমুসলিম সদস্য থাকতে পারবেন (মোট ১১ জনের মধ্যে)

সংশোধিত আইনের অনুচ্ছেদ ২৩ বাতিল করা হয়নি। তবে আদালত বলেছে যতটা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে, যাতে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) একজন মুসলিম হন। আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে, এগুলো শুধু অন্তর্বর্তী নির্দেশ। মূল মামলার শুনানিতে সব পক্ষ আবার তাদের যুক্তি তুলে ধরতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.