মণিপুরে সেনা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ফের উদ্ধার বহু আগ্নেয়াস্ত্র, পাঁচ জেলায় চলছে তল্লাশি অভিযান

সেনাবাহিনী, অসম রাইফেল্‌স ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ফের বহু আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হল মণিপুরে। দক্ষিণ মণিপুরের পার্বত্য জেলা চুড়াচাঁদপুর, থৌবাল, পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফল এবং কাংপোকপি জেলায় টানা তল্লাশি অভিযানের পর ওই অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।

গত ২১ অক্টোবর থেকেই অভিযান শুরু করে সেনা-পুলিশের যৌথ দল। কাংপোকপি জেলার লাইমাটন এবং আইজেজাংয়ের মাঝে ঘন জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে একটি স্নাইপার রাইফেল, একটি ৯ এমএম কার্বাইন মেশিনগান, ৯ এমএম পিস্তল, একটি বন্দুক এবং বেশ কিছু গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। অন্য দিকে, ২৪ অক্টোবর থৌবালে আর একটি পৃথক অভিযানে ঘাস দিয়ে ঢেকে রাখা এক সুড়ঙ্গ থেকে আরও কিছু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যে ছিল একটি ৯ এমএম কার্বাইন পিস্তল, একটি শটগান, কয়েকটি গ্রেনেড এবং পর্যাপ্ত গোলাবারুদ। একই দিনে পূর্ব ইম্ফলের সীমানায় তল্লাশি চালিয়ে কয়েকটি দূরপাল্লার মর্টার, একটি দো-নলা রাইফেল, দু’টি পিস্তল-সহ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আরও নানা আগ্নেয়াস্ত্র। শুক্রবার চুড়াচাঁদপুর এবং পশ্চিম ইম্ফল থেকেও বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া সমস্ত অস্ত্র হস্তান্তর করা হয়েছে মণিপুর পুলিশের কাছে।

সম্প্রতি মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ চলেছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বিভিন্ন এলাকা থেকে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও সেনার যৌথ দল। তার মাঝেই মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ দাবি করেন, জঙ্গলযুদ্ধ এবং ড্রোন হামলায় প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি জঙ্গি মায়ানমার থেকে মণিপুরে প্রবেশ করেছে। পরে অবশ্য সেই জল্পনা নস্যাৎ করেন সেনাপ্রধান। চলতি মাসের শুরুতে মণিপুরে আরও ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেল-সহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে এখনও রাজনৈতিক চাপানউতর চলছেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.