তমন্নার মৃত্যুতে ধৃত তৃণমূল নেতার পুত্র থেকে কালীগঞ্জের ‘নবাব’, এখনও অধরা ১৭ জন

নদিয়ার কালীগঞ্জের মোলান্দির নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এক জনের নাম নবাব শেখ। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি। আর এক জনের নাম হাবিবুল শেখ। তৃণমূলের এক বুথ সভাপতির পুত্র তিনি। তাঁর বাবা গাওয়াল শেখের বিরুদ্ধেই ‘মূল অভিযোগ।’ তিনি এখনও পলাতক।

শুক্রবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানার চৌরিগাছা থেকে হাবিবুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য দিকে, ধৃত নবাবের বাবা মানোয়ার শেখকে গত মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ছেলের হদিস পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার তাঁকে কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে হাজির করানো হবে এবং হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ।

প্রাক্তন বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা আলিফাকে কালীগঞ্জের বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। গত ১৯ জুন ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। গণনা হয় গত সোমবার, ২৩ তারিখ। তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হতেই বিজয়মিছিল বার করেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। অভিযোগ, একটি বিজয়মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হয় সিপিএম কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে। সকেট বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় বছর দশেকের তমন্নার। ঘটনাক্রমে উদ্বেগপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। নাবালিকার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন জয়ী তৃণমূল প্রার্থী আলিফা।

মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মোট ২৪ জনের নামে খুনের অভিযোগ করেন তমান্নার মা সাবিনা খাতুন। এখনও পর্যন্ত ছ’জন গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার

তমন্নার বাড়িতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সেখানে সাবিনা অভিযোগ করেন, তাঁদের বাড়ি ‘টার্গেট’ করে আক্রমণ করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা কাণ্ডের মূল মাথা গাওল শেখ। সে এখনও অধরা। আর এখনও দুষ্কৃতীদের বাড়িতে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা মজুত রয়েছে। বোমা উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকা ইতিবাচক নয়।’’ কাঁদতে কাঁদতে কন্যাহারা মহিলা বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে যে বোমা ছুড়েছিল, সেই কালুর মেয়ে আর আমার তমন্না একসঙ্গে খেলত।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.