টাকার বিনিময়ে ‘জাল’ শংসাপত্র প্রদান! কাঠগড়ায় রাজ্য ইউনানি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, গ্রেফতার

ভুয়ো ইউনানি চিকিৎসক চক্রের ‘মূলচক্রী’কে গ্রেফতার করল এন্টালি থানার পুলিশ। ধৃতের নাম ইমতিয়াজ় হুসেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের ইউনানি স্টেট কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। অভিযোগ, নিজের পদের অপব্যবহার করে ‘জাল’ বিইউএমএস শংসাপত্র টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন ইমতিয়াজ়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইউনানি স্টেট কাউন্সিলের পিওন হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন ইমতিয়াজ়। কিন্তু পরবর্তী কালে তিনিই কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার হন। তখন থেকেই তিনি টাকার বিনিময়ে ‘জাল’ শংসাপত্র বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ।

অভিযোগ, মোটা টাকা নিয়ে ইমতিয়াজ় ‘অযোগ্য’দের আরইউএমপি শংসাপত্র দিতেন। এই শংসাপত্রের বলে কোনও ব্যক্তি ডাক্তারি হিসাবে রেজিস্টার হওয়ার আগে চিকিৎসা করতে পারেন। অভিযোগ, ইউনানি চিকিৎসক হওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠি পূরণ করতে না পারা ব্যক্তিদের থেকে টাকা নিয়ে আরইউএমপি শংসাপত্র দিতেন বলে অভিযোগ ইমতিয়াজ়ের বিরুদ্ধে। এমনকি, রাজ্যের বাইরের অনেককেও তিনি ওই শংসাপত্র দিয়েছেন।

‘ভুয়ো’ শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি স্বাস্থ্য দফতরকে ইমতিয়াজ়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তদন্তে উঠে আসে ইমতিয়াজ়ই ঘটনার মূল অভিযুক্ত। অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে রাজ্য সরকার তাঁকে ‘পুরস্কৃত’ করে। রেজিস্ট্রার পদে তাঁকে পুনরায় নিয়োগ করা হয় ইউনানি স্টেট কাউন্সিলে।

তবে হাই কোর্টের নির্দেশের পর পুলিশ তদন্তে নেমে আগেও ইমতিয়াজ়কে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই জামিনে ছাড়া পেয়ে যান তিনি। জামিনে মুক্ত থাকার সময়েই আবার গ্রেফতার হন ইমতিয়াজ়। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে তাঁর খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। পরে কড়েয়া থানা এলাকার চামড়ু খানসামা লেনের এক বাড়ি থেকে ভোরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সোমবারই ইমতিয়াজ়কে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.