‘ইউরোপও রাশিয়ার তেল কিনছে’! ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও ভারতকে কেন শুল্কবাণ? ব্যাখ্যা দিলেন ট্রাম্প

ব্রিটেন সফরে গিয়ে এ বার ভারতের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের ব্যাখ্যা দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠকের পরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্য, ‘‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমার ভাল বন্ধু। গতকাল জন্মদিনে ওঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছি।’’

কিন্তু এর পরেই মোদী এবং ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও ভারতের উপর জরিমানা-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি বিধিনিষেধ আরোপ (ভারতের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক) করেছি, কারণ রাশিয়া থেকে ওরা তেল কিনেছে।’’ ভারত এবং চিনের মতো দেশ তেল কেনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছেন বলে দাবি করে ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘খুব সহজ ভাবে বলতে গেলে, তেলের দাম কমে গেলে পুতিন সরে আসবেন। তাঁর আর কোন বিকল্প থাকবে না। তাই তিনি সেই যুদ্ধ থেকে সরে আসবেন।’’ রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য চিনকেও ‘খুব চড়া’ শুল্ক দিতে হচ্ছে বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমি জেনেছি ইউরোপও তেল রাশিয়া থেকে তেল কেনে! তেল কেনা বন্ধ করতে হবে।’’

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে যে সমস্ত দেশ শুরুতেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল, তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল ভারত। কিন্তু আলোচনা স্থগিত করে ভারতীয় পণ্যের উপরেই সবচেয়ে চড়া হারে (৫০ শতাংশ) আমদানি শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত ২৭ অগস্ট থেকে তা কার্যকরও হয়েছে। পাশাপাশি, পাঁচ দফা বৈঠকের পরেও বাণিজ্যচুক্তির খসড়া নিয়ে ঐকমত্য হয়নি নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন। ট্রাম্প সরকারের অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, মস্কো থেকে তেল কেনাই নয়াদিল্লির উপর শাস্তিমূলক শুল্ক বলবতের একমাত্র কারণ নয়! তিনি বলেছিলেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা ভারতের উপর বাড়তি শুল্ক আরোপের অন্যতম কারণ।’’ ট্রাম্প বুধবার লন্ডনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.