গোঘাটে ছেলেকে না পেয়ে বিজেপি কর্মীর মা’কে পিটিয়ে খুন করল দুষ্কৃতিরা

ফের ফিরে এল উত্তর ২৪ পরগণার নিমতার ঘটনা। নিমতায় দুষ্কৃতিদের মারে আহত হয়ে মারা গিয়েছিলেন বিজেপি কর্মীর ৮৫ বছরের বৃদ্ধা মা। এবার ছেলেকে না পেয়ে মাকে পিটিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। ভোটের আগের দিন রাতের এই মর্মান্তিক ঘটনা হুগলির গোঘাট বিধানসভার বদনগঞ্জ এলাকার। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই নিয়ে তিন দফা ভোটের আগের রাতে তিনজন খুন হলেন প্রথম দফা ভোটের আগের রাতে নারায়ণগড়ে এবং দ্বিতীয় দফায় ভোটের আগের রাতে কেশপুরে ২ জন খুন হয়েছিলেন এবার গোঘাটেও একই ঘটনা ঘটল।

গেছে গতকাল রাত দশটা নাগাদ বদনগঞ্জ এর বিজেপি কর্মী পিরু বাদকের বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বাড়িতে ঢুকেই তার মাকে সামনে পেয়ে মারধর করে। তাঁর ছেলের খোঁজ করে। ছেলে খোঁজ না দেওয়ায়, তাঁকে লাথি মারে এবং বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারতে থাকে। তাঁর ছেলে বিজেপি কর্মী পিরু আদক জানান, রাত ১০টা নাগাদ আমরা খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়েছিলাম হঠাৎ মায়ের চিৎকার শুনে চিৎকার শুনে দরজা খুলে দেখি মাকে বন্দুকের বাঁট, লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে। এর পরেই তিনি ভয়ে লুকিয়ে পড়েন। দুষ্কৃতীরা তার মা মাধবী মাদককে(৫০) বেধড়ক মারধর করে চলে যায়। তাঁর চিৎকার শুনেও আশেপাশের কেউ এগিয়ে আসার সাহস করেনি। পিরু আদকের অভিযোগ, হামলা চালিয়েছে তৃণমূল প্রার্থী মানস মজুমদারের “সেনাবাহিনী”। আক্রমণকারিরা বাইকে করে এসেছিল। তাদের হাতে ছিল বন্দুক এবং লাঠি। দুষ্কৃতিরা চলে যাওয়ার পর মাধবী আদককে রাত একটা নাগাদ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ এবং আধাসেনা।

এই ঘটনায় আজ পিরু আদক এবং বিজেপির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানাগেছে।

উল্লেখ্য এই গোঘাট বরাবরই সন্ত্রাস কবলিত এলাকা। বাম আমলে মানুষ ভোট দিতে পারতেন না বলে অভিযোগ করতেন। এমনকি দিনের-পর-দিন গ্রামগুলিতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম ছিল। মাঝে মাঝেই বন্দুক এবং কামানের মতো ছোট ছোট আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম আক্রমণ করা হতো, পুড়িয়ে দেওয়া হতো ঘরবাড়ি, জমির ফসল। দিন বদলেছে, কিন্তু গোঘাটের সেই সন্ত্রাসের চেহারা এখনো বদল হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.