লোকসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্বে গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এক দিনের জন্য বাঁকুড়ায় ঢোকার অনুমতি পেয়ে জেলাশাসকের দফতরে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। আর এবার দীর্ঘ প্রায় সাত মাস পর অবশেষে বাঁকুড়ার মাটিতে পা রাখলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ‘বিতর্কিত’ বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
সোমবার দুর্গাপুর-বাঁকুড়া সীমান্তে ডিভিসি ব্যারেজের সামনে সাংসদকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন দলীয় কর্মী, সমর্থক, অনুগামী। ফুল আর মালা দিয়ে তাকে তারা বরণ করে নেন।
প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের আগে তৎকালীন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দিল্লীতে গিয়ে ঘাস ফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেন। একই সঙ্গে টাকা নিয়ে চাকরি করে দেওয়ার প্রতারণা মামলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞার জেরে দীর্ঘদিন তিনি বাঁকুড়া জেলায় ঢুকতে পারছিলেন না। প্রতারণা মামলার কারণে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর উপর বাঁকুড়ায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই আদেশের বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন তিনি৷ সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ বলা হয় অন্যান্য অনুমতির জন্য বিজেপি প্রার্থীকে হাইকোর্টেই আর্জি জানাতে হবে৷
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে ওই বিষ্ণুপুর কেন্দ্রেই বিজেপি তাকে প্রার্থী করে। সেই সময় হাইকোর্টের নির্দেশে এক দিনের জন্য মনোনয়পত্র জমা দিতে বাঁকুড়াতে ঢোকার সুযোগ পান তিনি। তবে নিজে সশরীরে উপস্থিত থেকে নির্বাচনী প্রচারের সুযোগ থেকে বঞ্চিতই থাকতে হয় সৌমিত্র খাঁকে। পরে লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় বিজেপির টিকিটে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তিনিই।
এদিন ফের আদালতের নির্দেশে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তার বিরুদ্ধে চলা প্রতারণা মামলায় জামিনের আবেদন করতে তিনি বাঁকুড়ায় ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷
সাদা পাজামা, গেরুয়া পাঞ্জাবি পরে গাড়ি করে দুর্গাপুর ব্যারেজ পেরিয়ে এপারে পা দিয়েই বাঁকুড়ার মাটিকে ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম জানান সৌমিত্র খাঁ। পরে স্ত্রী সুজাতা খাঁকে পাশে নিয়ে বিষ্ণুপুর বাসীকে প্রণাম জানিয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘সাংসদ হিসেবে বিষ্ণুপুরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার একমাত্র কাজ। সকলের জন্য কাজ চাই, সকলের জন্য ভাত চাই এই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রবিবার তৃণমূলের ধর্মতলার শহিদ সমাবেশ পুরো ‘ফ্লপ’ বলেও এদিন তিনি দাবি করেন।’
এখান থেকে তিনি সোজা বড়জোড়া হয়ে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সৌমিত্র খাঁ-এর বাঁকুড়ায় প্রবেশকে কেন্দ্র করে এদিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় বলে জানা যায়৷