পদ্মবসনা দেবী মূর্তি গড়ায় থিম মেকারকে বাদ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ার পুজো কালীঘাট সঙ্ঘশ্রী। এরপরই তৃণমূলকে কটাক্ষ করলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।
তিনি বললেন, “এবার ১০৮টা পদ্মফুলের বদলে ১০৮টা জোড়াফুল দিয়ে পুজো করতে বলবে তৃণমূল। বিজেপিকে নিয়ে তাদের এই আতঙ্ক আমরা ভীষণ উপভোগ করছি।”
গত বছর ডিসেম্বরেই কমিটির তরফে জানানো হয়েছিল সঙ্ঘশ্রীর ৭৪তম বর্ষে থিম হবে ‘কাটাকুটির খেলা।’ কিন্তু হঠাৎ ‘কাটাকুটির খেলা’র বদলে নতুন থিম করা হচ্ছে ‘সবার উপরে মানুষ সত্য।’
গতবার থিমের পাশাপাশি থিম মেকারের নামও জানিয়েছিল পুজো কমিটি। তারা বলেছিল এবার তাদের শিল্পী প্রদীপ্ত কর্মকার। তিনিই কাজ শুরুও করে দিয়েছিলেন। মৃৎশিল্পী পরিমল পালকে ঠাকুরের ডিজাইন করে অর্ডার দিয়েছিলেন প্রদীপ্ত। কিন্তু কদিন আগে ক্লাব কর্তারা প্রদীপ্তকে বলেন, ঠাকুরের আদল বদলাতে হবে। পদ্মফুলের উপর মা দুর্গাকে বসানো যাবে না। সঙ্ঘশ্রীর সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শিল্পীকে বলা হয়েছিল ডিজাইন পাল্টাতে। পদ্মফুলে ঠাকুরকে দাঁড় করানো যাবে না। রাজি না হওয়াতেই থিম মেকার বদলাতে হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, তৃণমূলের ইচ্ছেতেই পুজো থেকে ‘পদ্ম’ ছোঁয়া সরিয়ে দিচ্ছে সঙ্ঘশ্রী। যদিও ক্লাবের কেউই সেকথা মানতে রাজি নয়। তাদের বক্তব্য, পাড়ার লোকেরাই এই থিম চেয়েছেন। তাই তাদের ইচ্ছেতেই থিম বদলাতে হয়েছে।উল্লেখ্য, ওই পাড়াতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দোপাধ্যায় থাকেন। তিনি ওই পুজোর অন্যতম হর্তাকর্তা।
গত বছরও এই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দিয়ে মণ্ডপের ফিতে কাটানোর কথা ভেবেছিল কমিটির একাংশ। এমনকি কমিটির সভাপতি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল রাজ্য বিজেপির নেতা সায়ন্তন বসুকে। আর তা নিয়েই গোল বাধে। তবে সব দিক থেকেই সঙ্ঘশ্রীর পুজোয় গৈরিকিকরণ ঠেকিয়ে নিজেদের দখলে রাখল তৃণমূল।
তবে গেরুয়া শিবির এসব আমল দিতে রাজি নয়। তাদের দাবি, বিজেপিকে যে তৃণমূল কতটা ভয় পেয়েছে সেটা পুজোর থিম বদল বা মণ্ডপ শিল্পী বদলের মতো ছোট ছোট ঘটনাতেই পরিষ্কার।