তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ওপরেই আস্থা হারিয়েছেন! এবার সেই পথে হাঁটতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীরাও। লোকসভা ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সাংসদ ভাইপোর সৌজন্যে বাংলার রাজনীতিতে আবির্ভাব হয়েছে বিহারী ভোট গুরু প্রশান্ত কিশোরের। সম্প্রতি কালীঘাটে তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অভয় দিয়েছেন তিনি।
জেলা সভাপতিদের মারফত সেই বার্তা পেয়েছে নিচুতলা। তাই এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মীরা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ রেখে প্রশান্ত কিশোরের বক্তৃতা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা শুরু করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রশান্ত কিশোর তাঁর রাজনৈতিক ভাবধারার কথা বলছেন যুব সমাজের উদ্দেশ্যে। কীভাবে একের পর এক রাজনৈতিক শিড়ি চরে কাউন্সিলর, বিধায়ক ও সাংসদ হওয়া যাবে।
প্রশ্ন উঠছে, কেন এই উলটপুরাণ ? ১৩ জুলাই “মমতা ব্যানার্জি ফ্যানস ক্লাব”-এর একটি ফেসবুক পেজে প্রশান্ত কিশোরের ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা হয়েছে, “দেশের যুব সমাজের উদ্দেশ্যে প্রশান্ত কিশোর কী বার্তা দিলেন শুনে নিন!” প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর ফ্যান্স ক্লাবের এই পেজের ফলোয়ারের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৬ হাজারের কিছু বেশি। এবং তৃণমূল কংগ্রেস ডিজিটাল সেলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই ফেসবুক পেজটি।
এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর গুঞ্জন শুরু হয়েছে, দলনেত্রীর ওপর কী আস্থা হারিয়েছে তাঁরই দল? এমন প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক তথা ভোট বিশেষজ্ঞ বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসে একটা ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে এটা ঠিক কথা। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর দলকে সামাল দিতে পারছেন না।
সেই পরিস্থিতিতে চার ঘণ্টা বৈঠক করে প্রশান্ত কিশোরকে তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের বার্তা দিতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিই বাস্তব চিত্র তুলে ধরছে।” সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “আমি খবর নিয়ে জেনেছি জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে রাজনীতি করার পরিসর দিতে হবে। এর ফলে তৃণমূলের লাভ বা বিজেপির ক্ষতি হবে কিনা বলতে পারব না। কিন্তু গত ৮ বছরে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জমানায় বাংলার মানুষের যে দাবি ছিল, তা পূরণ হতে পারে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে।” এসবের মাঝে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ থেকে নিচুতলার নেতৃত্ব কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্ব নিয়ে সন্দিহান!