রাজ্যের সমস্ত জেলাকেই ছুঁয়ে ফেলল বর্ষা। এমনটাই জানাল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপের হাত ধরে ধীরে ধীরে দক্ষিণবঙ্গের রাজয়গুলিতে এসে গেল বর্ষা। জ্যৈষ্ঠ মাস আর দিন তিনেক বাকি। আষাঢ় মাস আগমনের সন্ধিক্ষণে তা সারা বাংলাকে প্রায় ধরে নিয়েছে বলে জানাল হাওয়া অফিস। পুরুলিয়া জেলায় শুধু বর্ষা আগমন বাকি রয়েছে। মাত্র একটি জেলা বাকি রয়েছে। সেখানেও আগামী ২৪ ঘন্টায় বর্ষা চলে আসবে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে এই নিম্নচাপ এবার উত্তর পশ্চিমে এগোবে। যত সেদিকে এগোবে তত বেশি বৃষ্টি হবে পশ্চিমের জেলায়। আগামী ৭২ ঘণ্টায় বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হতে পারে ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টি জারি থাকবে ১৪ ও ১৫ তারিখেও। ১৩ তারিখ ঝড়ো হাওয়া দিতে পারে দুই ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পঙে ১৪ তারিখ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ১৫ জুন জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হবে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে।
এদিকে বর্ষার বৃষ্টিতে (rain) অস্বস্তিকর গরম থেকে কলকাতাকে আপাতত মুক্তি দিয়েছে। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আজ শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৫ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৬৫ শতাংশ। বৃষ্টি হয়েছে ২১.৫ মিলিমিটার। যার হাত ধরে স্বাভাবিকের নীচে তাপমাত্রা।
শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৮ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৬৬ শতাংশ। বৃষ্টি হয় ছিটেফোঁটা।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর জেরে হালকা থেকে মাঝারি, কোথাও ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এমন ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। প্রসঙ্গত, শুক্রবার নিম্নচাপের (low pressure area) হাত ধরেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (south westerly monsoon) প্রবেশ করে দক্ষিণবঙ্গে (south bengal)। দক্ষিণবঙ্গের চারটি জেলায় প্রবেশ করে বর্ষা।
উত্তরবঙ্গের মালদহ দুই দিনাজপুরের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের কৃষ্ণনগর ও ক্যানিং, উত্তর ২৪ পরগণার একটু অংশে ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার তলার দিকে অংশে আসে বর্ষা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘নিম্নচাপের হাত ধরে দক্ষিণের চার জেলাকে ছুঁয়েছে বর্ষা। আগামী দুই দিনে আমরা আশা করছি পুরো বাংলাকে বর্ষা কভার করে নেবে’।
এদিকে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সুজীব কর বলছেন, ‘আবহাওয়া দফতর বলছে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করেছে রাজ্যে। সেটা ঠিক কিন্তু এই যে বৃষ্টি এখন হচ্ছে সেটা সিস্টেম কেটে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবে। কারণ মৌসুমী বায়ু যাচ্ছিল বাংলাদেশ মায়ানমারের দিকে। সিস্টেম সেটিকে টেনে এনে বৃষ্টি করিয়ে দিচ্ছে। ঠিকঠাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হবে তিন জুনের পর’। হাওয়া অফিস এও জানাচ্ছেওডিশার পুরীতেও দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করেছে।