মমতা ছাপ্পার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাই এত রাগ: তীক্ষ্ণ সমালোচনা মোদীর

নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সমালোচনা যেন আরও কয়েক দাগ বাড়িয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা করতে গিয়ে কখনও কখনও দৃশ্যত মেজাজ হারাচ্ছেন তিনি।

শনিবার বাংলায় প্রচারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তা নিয়েই খোঁচা দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন হুগলির তারকেশ্বর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুরে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দুই সভাতেই ভিড় ছিল নজরে পড়ার মতো। সোনারপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় তারিয়ে তারিয়ে বলেন, এতো রাগ কেন দিদি? বাংলার মানুষ দশ বছর ধরে আপনাকে এত সুযোগ দিয়েছে, তার পরেও রাগ? সরকারি প্রকল্পের টাকা থেকে কাটমানি নেওয়া হয়েছে, তার পরেও রাগ! গরিবের দোকান-মকান থেকে তোলাবাজি করা হয়েছে, তার পরেও এই রাগ কেন দিদি? বালি, কয়লার সিন্ডিকেট থেকে এতো টাকা তোলা হল, তার পরেও রাগ!

প্রধানমন্ত্রী যখন এ সব বলছেন, সভাস্থল জুড়ে তখন স্বতঃস্ফূর্ত হাততালি দিচ্ছিলেন সমর্থক-কর্মীরা। সেই আবহ থেকে যেন আরও অক্সিজেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দিদি ছাপ্পা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না তো, তাই এতো রাগ!

বাংলায় এবার ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার নির্বাচন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর দোষারোপ করছেন। তাঁর অভিযোগ বিজেপির হয়ে কাজ করছে তারা। প্রধানমন্ত্রী এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দিদি দশ বছর আগে এই কমিশন, এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই তো আপনার ভরসা ছিল। এই নির্বাচন কমিশন, এই ইভিএমের দৌলতেই তো বাংলায় দশ বছর সরকার চালাতে ভাল লেগেছে।
বাংলায় তৃণমূল জমানায় প্রায় প্রতিটা নির্বাচনেই ভোট লুঠ, ছাপ্পা, হিংসা, প্রতিপক্ষকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তা সে পঞ্চায়েত ভোট হোক বা লোকসভা নির্বাচন। এ বার ভোটে সে সব রুখতে কমিশন যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তা নিয়ে সংশয় নেই। একেকটি বিধানসভায় গড়ে কুড়ি থেকে বাইশ কোম্পানি শুধু আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের পরিবর্তে বুথের একশ মিটারের মধ্যে থাকছে কেবল কেন্দ্রীয় বাহিনী। এবং তাৎপর্যপূর্ণ হল, উনিশের ভোটে পর্যন্ত বাম, কংগ্রেস, বিজেপি যে ভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা, ভোট লুঠের অভিযোগ করত তা বেমালুম হাওয়া হয়ে গিয়েছে। উল্টে দেখা যাচ্ছে, বারবার কমিশনের কাছে যাচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা।

সার্বিক এই প্রেক্ষাপটেই প্রধানমন্ত্রী এদিন কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী এদিন এও বলেন, “দিদি আপনি তৃণমূলের গুণ্ডাদের সামলান। এখানে মোদী এসেছে। এখানে গুণ্ডামি চলবে না। বাংলা আর তৃণমূল ক্যাডারের হিংসা চায় না। বাংলার নিজের মেয়েদের সুরক্ষা চায়। নিজের মেয়েদের শিক্ষা চায়, কাজ চায়, সুবিচার চায়”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.