মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ নতুন নয়। বিরোধীরা বারবার বলে আসছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট ব্যাংকের স্বার্থে মুসলিমদের তোষণ করেন। তবে এবার সেই অভিযোগ তুললেন খোদ মুসলিমরা। মুসলিম বলে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, মুখ্যমন্ত্রীর দিকে সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন কলকাতার মুসলিমরাই।
শহর কলকাতায় একেবারে টাটকা দুটি ঘটনাকে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন বেশ কয়েকজন মুসলিম। এনআরএসে চিকিৎসককে মার ও রাতের কলকাতায় উষশী সেনগুপ্তকে হেনস্থা। দুটি ঘটনাতেই অভিযুক্তরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। আর দুটি ঘটনাতেই প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েই। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই খোলা চিঠি লিখেছেন বেশ কয়েকজন মুসলিম। তাঁদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন চিকিৎসকও রয়েছেন।
তাঁরা লিখেছেন, ‘আমরা মুসলিম। আমরা গত কয়েক দশক ধরে কলকাতায় রয়েছি।’ দুটি ঘটনা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা লিখেছেন, ‘এইসব ঘটনায় আমরা লজ্জিত।’ এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীকে দুটি উপায়ের কথা বলেছেন তাঁরা।
এক, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। না, শুধু এই দুটি ঘটনায় নয়। যে কোনও ঘটনায় মুসলিমরা যুক্ত থাকলেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা মুসলিম বলে যাতে তারা ছাড় না পায়, এমন আর্জিই জানিয়েছেন এরা। চিঠিতে তাঁরা স্পষ্ট লিখেছেন যে, এক্ষেত্রে অন্তত এমন বার্তা পৌঁছবে না যে একটি সম্প্রদায়ের মানুষকে রক্ষা করা হচ্ছে বা তোষণ করা হচ্ছে।
দুই, কলকাতা জুড়ে থাকা মুসলিম ছেলেদের রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কে অবগত করা হোক, সচেতন করা হোক। এটি সময় সাপেক্ষ বিষয়। তবে, সঠিকভাবে প্রয়োগ করলেই নিশ্চয় কাজ হবে।
মুদর পাথেরিয়া নামে এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুকে ওই চিঠি পোস্ট করেছেন। তিনি নিজেও চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়াও রয়েছেন হেনা নাফিস, শাহেনশা মির্জা, শবনম আলম সহ অনেকেই নাম।
এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সাংবাদিক বৈঠক উল্লেখ করা দরকার। লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে মমতা রেগেই বলেছিলেন, ”আমি কিন্তু ইফতারে যাচ্ছি৷ আপনারাও আসবেন৷ আমি তো মুসলমানদের তোষণ করি৷” বারবার বিরোধীদের তোপের মুখে একথা বলেছিলেন তিনি। আরও বলেছিলেন, ‘‘যে গরু দুধ দেয় তার লাথি খাওয়া উচিত৷’’ অর্থাৎ, গরুর দুধ দেওয়ার তুলনা টেনে তিনি যে কার্যত মুসলিমদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলছেন, সেটা তৃণমূলনেত্রীর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন বিরোধীরাই।