আজ রামের দিন, কৃষ্ণের দিন, রামকৃষ্ণেরও দিন

বাংলার ভাগ্যাকাশে নতুন যুগের সূচনাতে সবসময় ভগবান রামলালার কিছু না কিছু লীলা থাকে। দেড়ে গ্রামের জমিদার ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়কে মিথ্যে সাক্ষী দিতে বলেছিলেন। ক্ষুদিরাম রাজী হননি। তাঁকে সপরিবারে গ্রাম ছাড়তে হল। এলেন কামারপুকুরে। সেদিন ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় দেড়ে গ্রাম থেকে সহায় সম্বল বলতে কিছুই আনতে পারেননি। বুকে করে কেবল এনেছিলেন কুলদেবতা রঘুবীরকে। রঘুবীর রামচন্দ্রই ছিলেন সহায়। ১৮৩৬ সালে সেই কামারপুকুরেই আবির্ভুত হলেন ভগবান গদাধর, ঠাকুর রামকৃষ্ণের রূপ ধরে। সেটাই রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাবান্দোলনের সূচনা লগ্ন।

১৮৬৪ সাল নাগাদ দক্ষিণেশ্বরে জটাধারী রামলালাকে নিয়ে এলেন। ছোট্ট ধাতুর তৈরী শিশু রামচন্দ্র। জটাধারীর রামলালা ঠাকুরের কাজে এসে জীবন্ত প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিলেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে লীলাতে পাগল করে দিয়েছিল রামলালা। ঠাকুরের সঙ্গে খেলা করে, ফুল তুলে, দুষ্টুমি করে মাতিয়ে রাখতো শিশু রামচন্দ্র। জটাধারী ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দিয়েই গেলেন রামলালাকে। রামলালার মাধ্যমে ঠাকুরের ভগবান রামচন্দ্রের দর্শন হল। রামকৃষ্ণ দেখলেন দশরথ নন্দন রামই এই সৃষ্টি, স্থিতি আর বিনাশের দেবতা। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড, জগৎ প্রপঞ্চ তাঁরই প্রকাশ।

১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি ঠাকুর কল্পতরু হয়েছিলেন। সেই বছর ৭ জানুয়ারি তিনি তাঁর প্রিয় শিষ্য নরেনকে নিজের কুলদেবতা রামের ইষ্টনাম দিলেন। ‘কথামৃতের’ রচয়িতা মাস্টারমশায় শ্রীম ১৩ জানুয়ারি নরেন্দ্রনাথ পাগলের মতো রামধুন গাইতেন। অবশেষে ১৬ জানুয়ারি ভগবান শ্রীরামচন্দ্র নরেন্দ্রনাথকে সন্ন্যাসীবেশে দেখা দিলেন। ক্ষত্রিয় রামের সন্ন্যাসী বেশ, যখন রাজা রাম বনবাসী হয়েছিলেন। বীর সন্ন্যাসী স্বামিজীও সারাজীবন সন্ন্যাসীর বেশে ক্ষত্রিয়ের কাজ করেছেন। বিশ্বসভায় হিন্দুধর্মকে পুনর্স্থাপনের কাজ কোন বীরের থেকে কম সাহসের কাজ ছিল না। স্বামী বিবেকানন্দ মাদ্রাজে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, “এই প্রাচীন বীরযুগের আদর্শ–সত্যপরায়ণতা ও নীতির সাকার মূর্তি, আদর্শ তনয়, আদর্শ পতি, আদর্শ পিতা, সর্বোপরি আদর্শ রাজা রামচন্দ্রের চরিত্র অঙ্কন করিয়া মহর্ষি বাল্মীকি আমাদের সম্মুখে স্থাপন করিয়াছেন।”

আমাদের শৈশবে কিন্তু মায়ের মুখে রামায়ণের কাহিনীর পরেই রামকে চিনেছিলাম রবি ঠাকুরের কবিতার মাধ্যমে। ‘বাবা যদি রামের মতো পাঠান আমায় বনে, যেতে আমি পারি নাকো তুমি ভাবছো মনে?/ কিন্তু আমি পারি যেতে ভয় করি না তাতে/ লক্ষণভাই যদি আমার থাকত সাথে সাথে’। যোগীন্দ্রনাথ বসুর ‘সরল কৃত্তিবাস’ গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। সেই গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, “বাঙ্গালাদেশে যে একসময়ে সমস্ত জনসাধারণকে একটা ভক্তির প্লাবনে প্লাবিত করিয়া তুলিয়াছিল, সেই ভক্তিধারার অভিষেকে উচ্চ-নীচ, জ্ঞানী মূর্খ, ধনী দরিদ্র, সকলেই, এক আনন্দের মহাযজ্ঞে সম্মিলিত হইয়াছিল-বাঙ্গালা রামায়ণ, বিশেষভাবে, বাঙ্গলাদেশের সেই ভক্তিযুগের সৃষ্টি। বাঙ্গালাদেশে সেই যে এক সময়ে, একটি নবোৎসাহের নব-বসন্ত আসিয়াছিল, সেই উৎসবকালের কাব্যগুলি বাঙ্গালির ছেলে যদি শ্রদ্ধাপূর্বক পাঠ করে, তবে দেশের যথার্থ ইতিহাসকে সজীবভাবে উপলব্ধি করতে পারবে।”

অত্যন্ত ছোট বয়স থেকে রামায়ণ ও ভগবান রামচন্দ্র রবীন্দ্রনাথের জীবনে, কবিসত্ত্বায় প্রভাব ফেলেছিল। সেই প্রভাব কবির ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থে, ‘ছেলেবেলা’ প্রবন্ধে, ‘শিক্ষার হেরফের’ প্রবন্ধে, গীতিনাট্য ‘বাল্মিকী প্রতিভা’ বা ‘কালমৃগয়া’ কিংবা দীনেশচন্দ্র সেনের ‘রামায়ণী কথা’ গ্রন্থের ভূমিকা সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। রবীন্দ্র ভাবনায় সর্বত্র রামায়ণের ছাপ। ‘তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই’ এর মতো শত শত রূপকে রামায়ণের ছাপ স্পষ্ট।

কাজী নজরুল ইসলামের একাধিক গানে কবিতায় উঠে এসেছেন মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র। নজরুলের রামচন্দ্র অনেক কষ্ট সহ্য করা, অন্যায়ের বিরূদ্ধে লড়াই করা, সব রকম দায়িত্ব নীরবে পালন করা এক ট্র্যাজিক নায়ক। বিদ্রোহী কবির ভাষায়, ‘অবতার শ্রীরামচন্দ্র/ যে জানকিপতি, তারও হল বনবাস/ রাবণ করে দুর্গতি।’

এস ওয়াজেদ আলির বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘ভারতবর্ষ’। একটি বাঙালী মুদি পরিবারের গল্প। লেখক একটি মুদিখানা দোকানে একটি দৃশ্য দেখেছিলেন। একজন যুবক মুদি দোকানদার কাজের ফাঁকে ফাঁকে তার বৃদ্ধা মাকে কৃত্তিবাসী রামায়ণ পাঠ করে শোনাচ্ছে। সেই যুবকের স্ত্রী তার কোলের ছেলেকে নিয়ে গৃহকার্যের মাঝে এসে বসে বসে রামায়ণ শুনছে আবার উঠে যাচ্ছে। লেখক বহু বহু বছর পরে এসে দেখলেন অবিকল একই দৃশ্য। সেই যুবক মুদি, বৃদ্ধা মা, ছেলে কোলে গৃহবধূ আর সেই কৃত্তিবাসী রামায়ণের বইটি পাঠ করা হচ্ছে। লেখক প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। শেষে বুঝলেন, সেদিনের কোলের শিশু আজকের যুবক মুদি, সেদিনের তরুণী বধূই আজকের বৃদ্ধা, সেই “ট্র্যাডিশন সমানে চলছে।’

তবে কেন আজ পশ্চিমবঙ্গে রামনাম নিয়ে এত আপত্তি? আপত্তির মূলে আছে বহু বছরের রাজনৈতিক পাপ। যে বাঙালি হিন্দু ছিল ভারতবর্ষের নবজাগরণের কাণ্ডারী, আজ তারাই অবলুপ্তির পথে। রামমোহন, ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, শ্রীঅরবিন্দ, রবীন্দ্রনাথ থেকে সুভাষচন্দ্র বসু বাঙালি হিন্দুরই জাতীয়তাবোধের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরী করেছে। ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী থেকে আন্দামানের সেলুলার জেলের যাবজ্জীবন পাওয়া বন্দীদের তালিকায় প্রায় সব নামই বাঙালি হিন্দুর। অথচ এত সংগ্রামের পরে বাঙালি হিন্দুই কেবল নির্যাতিত, লুণ্ঠিত, ধর্ষিত হয়েছে। আজ সারা পৃথিবীর বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ হিন্দু। ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার সময়েও সংখ্যাটা প্রায় ৫০ শতাংশ ছিল। এই বিপুল পরিমাণ মানব সম্পদ হ্রাসের জন্য প্রধান দায়ী বাঙালি হিন্দুদের দুর্দশার প্রতি রাজনৈতিক অবহেলা।

বামদলগুলি পূর্ববঙ্গের হিন্দু নির্যাতনের বিরূদ্ধে একটি কথাও বলেনি। কংগ্রেস বা তার থেকে তৈরী হওয়া দলগুলি এপার বাংলা বা ওপার বাংলাতে কোথাও হিন্দুদের জন্য একটি কথাও বলেনি। তাই হিন্দু বাঙালি আজ বিলুপ্তির পথে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সি এ এ) কোন ধর্ম সম্প্রদায়ের কারো কোন ক্ষতি করবে বলে কোন বাস্তববুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বলবেন না। এই আইনে কেবল মাত্র বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তুরাই সুবিধা পাবে। কিন্তু সব হিন্দুবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিই মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে।

এই রাজ্যে রাম জন্মভুমি আন্দোলনে যেসব বাঙালি যুক্ত ছিলেন তাঁদের কত কষ্ট, কত লাঞ্ছনা অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছ তা নিয়েও একটা রামায়ণ লেখা হয়ে যাবে। বর্ধমান স্টেশনে অযোধ্যা ফেরত নিরীহ করসেবকদের আধমরা করে ফেলে গিয়েছিল সিপিএমের হার্মাদরা। রক্তমাখা অস্ত্রহাতে যেসব রক্তআঁখি শ্রীরাম শিলাপূজনকে ‘ইটপুজো’ বলেছিলেন, করসেবকদের মাথা গুঁড়িয়ে দেবেন বলেছিলেন, তাঁরা সকলে আজ শিশুপাঠ্য কাহিনীতে মুখ ঢেকে আছেন। অন্যদিকে, কলকাতার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দুই স্বয়ংসেবক রাম কোঠারী আর শরৎ কোঠারী অযোধ্যায় প্রাণ দিয়েছিলেন। এমনই শতশত প্রাণের বলিদান আজ সফল হয়েছে। আজ ৫ আগস্ট ২০২০ সেই শুভদিন, ভগবান রামচন্দ্রের জন্মস্থানে এক সুন্দর মন্দির তৈরী হবে।

মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন যে ওই জমিতে বাবরের ভারত আক্রমণের আগে একটি সম্পূর্ণ মন্দির ছিল। উজবেকিস্তানের থেকে আসা বিদেশী আক্রমণকারী বাবর ভারতের হিন্দু বা মুসলমান কারোরই শ্রদ্ধাভাজন হতে পারেন না। বিশেষ ভাবে যিনি নির্দয়ভাবে এখানকার শ্রদ্ধাস্থলগুলি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। পৃথিবীর যেকোন বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষই এটাকে মেনে নেবেন। কিন্তু মেনে নেননি তথাকথিত মার্ক্সবাদী ঐতিহাসিকরা। এলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট এঁদের আক্ষরিক অর্থেই অশিক্ষিত (আনঅ্যাকাডেমিক) কলেছেন। রোমিলা থাপার, ইরিফান হাবিব, সুরজ ভান, ডি মণ্ডল, রামচন্দ্র গুহ, দীজেন্দ্র নারায়ণ ঝা, সুপ্রিয়া ভার্মাদের মত বামপন্থী ঐতিহাসিকরা কোন গবেষণার আগেই ‘ঐতিহাসিক বস্তুবাদের’ খোয়াব দেখেন। এলাহাবাদ হাইকোর্ট এঁদের ইতিহাস না লিখে কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী লিখতে বলেছেন।

অথচ এই পণ্ডিতম্মন্য একএকজন বামপন্থী কলকাতায় আসতেন আর তাঁদের কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী শুনে হার্মাদরা ঝাঁপিয়ে পড়ত। ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর সামনে একজন বিদ্যার্থী পরিষদের ছাত্রকে রামজন্মভূমি আন্দোলনের লিফলেট বিলি করার অপরাধে প্রায় জনা তিরিশেক বামপন্থী অমানবিক ভাবে মারে। তাঁকে সেদিন উপাচার্যের ঘর থেকে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ধনঞ্জয় দাস। অধ্যাপক দাস সেদিন একটা সরল প্রশ্ন করেছিলেন, একটিমাত্র ছেলেকে এতজনে মিলে মারলে কেন? ওকি দেশের আইন বিরূদ্ধে কোন কাজ করেছে? নাকি অন্য কলেজের ছেলে হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে বলে? আজ দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে প্রমাণ হচ্ছে যে ওই লিফলেটের সব কথাই সত্যি ছিল। কিন্তু পরমত অসহিষ্ণুতাই হল বামপন্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান!

আজ বাংলার পরিস্থিতিতে রামজন্মভুমির ভূমিপূজন এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। পশ্চিমবঙ্গ আজ এক চরম অরাজকতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সমগ্র বাংলাটাই পাকিস্তানে চলে যাওয়ার কথা ছিল। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়দের অক্লান্ত প্রচেষ্টাতে পশ্চিমবঙ্গ ভারতে থেকেছে, ‘বেঙ্গলি হিন্দু হোমল্যান্ড’ হিসাবে। কিন্তু আজ এখানে হিন্দুর অস্তিত্ত্বই বিপন্ন। জেহাদি দাঙ্গাবাজরা কালিয়াচক থানা জ্বালিয়ে দিল, খাগড়াগড়ের ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বানানোর কারখানা বানালো, সরকার সিমুলিয়ার মাদ্রাসার মত জঙ্গী আস্তানাকে তৈরি হয়েছে রাজ্যে, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অপরাধী জেহাদি চক্র রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে, নিরপরাধ মানুষ নিহত হচ্ছেন, অসহায় নাবালিকা ধর্ষিতা হচ্ছে, তপশিলি জাতি উপজাতির হিন্দুরা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসছে, কোথাও কোনো বিচার নেই। এখানে ধূলাগড়ের মতো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, স্কুলে সরস্বতী পূজো করার জন্য ছাত্রী প্রহৃত হচ্ছে, উর্দু নয় বাংলা ভাষার শিক্ষক চাই সেই দাবী করার জন্য ছাত্রদের গুলি করে মেরে ফেলা হয়। স্বাধীন ভারতে এতো উগ্র হিন্দুবিরোধী শক্তি এর আগে আর কখনো পশ্চিমবঙ্গের মাথা চাড়া দিতে পারেনি।

তাই স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের হিন্দুসমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে এরাজ্যে লকডাউন। রামমন্দির নির্মাণের সঙ্কল্প নিয়েছিল হিন্দু সমাজ, কোন দল বা সংস্থা নয়। হিন্দু সমাজ সারা পৃথিবীতেই সুশৃঙ্খল হিসাবে এবং আইনের অনুসারী বলে সম্মান পেয়ে থাকে। তাই লকডাউন না থাকলেও, করোনার অতিমারির কথা ভেবে সংযত, স্বাস্থ্য বিধিসম্মত ভাবেই তাঁদের ঐতিহাসিক স্মরণীয় দিন পালন করতেন হিন্দুরা। এই লকডাউন যেন সমগ্র হিন্দু সমাজকে অসম্মান।

ভুমিপূজনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সব বড় তীর্থক্ষেত্র থেকে মাটি আর জল অযোধ্যায় রামলালার অভিষেকে গেছে। আজ দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে বাংলার সব হিন্দুর ঘরে ঘরে বাজবে শঙ্খধ্বনি, সন্ধ্যা ৬টায় ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে হবে অকাল দীপাবলী। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ হয়তো উঠে দাঁড়ানোর সঙ্কল্পটাও নেবেন।

লালকৃষ্ণ আডবানী যখন রামরথ নিয়ে জনজাগরণে বের হয়েছিলেন, সেদিন দেশ জুড়ে স্লোগান উঠেছিল, ‘আডবানিজী কা কাহনা সাফ, রাম রোটি আউর ইন্সাফ’। রাম, রুটি বা পেট ভরে খাবার আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনের শাসন। আজ অযোধ্যায় ভূমিপূজনের দিন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ হয়তো রুটি আর ইন্সাফের জন্য সঙ্কল্প নেবেন। পশ্চিমবঙ্গের সকল প্রান্তিক মানুষ যেন দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারেন আর রাজ্যে যেন ন্যায়ের শাসন ফিরে আসে সেই আশায়। অশুভ শক্তির অবসান ঘটিয়ে রামরাজ্য স্থাপন হবেই। জয় শ্রীরাম।

জিষ্ণু বসু

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.