নোয়াপাড়া ফিরেই তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগের জবাব দিলেন বিধায়ক সুনীল সিং। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে অনুযোগের সুরে সুনীল সিংকে উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আত্মীয়র কথায় টিকিট দিয়ে ভুল করেছিলাম।” যার অর্থ ছিল, অর্জুন সিংয়ের কথাতেই সুনীল সিংকে নোয়াপাড়া বিধানসভা উপনির্বাচনে টিকিট দেওয়া তাঁর ভুল সিদ্ধান্ত। ওইদিনই দিল্লিতে অর্জুন সিংয়ের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরের নাম লিখিয়েছেন অর্জুন জামাতা।
বুধবার দমদম বিমানবন্দরে নেমে পেয়েছেন কর্মী-সমর্থকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা তিনি। নোয়াপাড়া পৌঁছেই বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে একটি পথসভায় হাজির হন সুনীল। মমতার মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে নোয়াপাড়া বিধায়ক বলেন, “২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে রাজ্য জুড়ে জয় পেলেও নোয়াপাড়ায় হেরে গিয়েছিল তৃণমূল। এখানে কংগ্রেস জিতেছিল। সেই হারা আসনে আমাকে প্রার্থী করা হয়েছিল। জিতে দেখিয়ে দিয়েছিলাম।” অর্জুন সিংয়ের সাংগঠনিক দক্ষতার কারণেই যে ৬৩ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি, তাও উল্লেখ করতে ভোলেননি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসুকে ১০৮০ ভোটে হারিয়ে নোয়াপাড়া আসনে জয়ী হয়েছিলেন বাম কংগ্রেসের জোট প্রার্থী মধুসূদন ঘোষ। ২০১৮ সালে অশীতপর কংগ্রেস নেতা মধুসূদন ঘোষ প্রয়াত হলে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে নোয়াপাড়ায়। এবার আর মঞ্জু বসুকে প্রার্থী না করে সুনীল সিংকে টিকিট দেন মমতা। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছিল ভগ্নিপতির হয়ে দিদির কাছে থেকে নোয়াপাড়ার টিকিট চেয়ে নিয়েছেন অর্জুন সিং।
সব ঠিকই চলছিল, কিন্তু বিধি যে বাম! সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে সেই অর্জুন সিংই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির পদ্ম প্রতীকে ব্যারাকপুর লোকসভা প্রার্থী হয়ে যান। ১০ বছরের তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে ১৪ হাজারের কিছু বেশি ভোটে হারিয়ে এখন পুরোনো দল ভাঙতে শুরু করেছেন ভাটপাড়া ভূমিপুত্র।
সেভাবেই জোড়াফুল শিবির থেকে ভগ্নিপতি সুনীল সিংকে নিয়ে গিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের আশ্রয়ে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বদলে অর্জুন সিংয়ের প্রতি বেশি কৃতজ্ঞ থেকেছেন সুনীল। সঙ্গে প্রাক্তন দলনেত্রীকে জবাব দিতে ২০২১ সালে নোয়াপাড়া বিধানসভা থেকে এক লক্ষ ভোটে জেতার প্রতিজ্ঞা নিয়েছেন নোয়াপাড়া বিধায়ক!