রাজ্যের স্বাস্থ্য সংকট কাটাতে উদ্যোগ নিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জরুরী তলব করেছেন তিনি।
মধ্য কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। রোগী মৃত্যু ঘিরেই ওই জটিলতা তৈরি হয়। এক চিকিৎসককে গুরুতর জখম হতে হয়। একই সঙ্গে আরও কয়েকজন চিকিৎসক জখম হয়েছিলেন।
সেই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে ওই হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সেই রেশ ক্রমেই ছড়িয়ে পরে অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গুলিতে। রাজধানী শহর কলকাতা ছাড়িয়ে সেই আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পরে রাজ্যের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ গুলিতেও। জেলার হাসপাতাল গুলিতেও কর্মবিরতি শুরু করে দেন চিকিৎসকেরা।
এই ঘটনার ফলে প্রবল প্রতিকূলতা তৈরি হয় রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থায়। অনেক রোগীর মৃত্যুও হয়। কিন্তু নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন চিকিৎসকেরা। কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবি নিয়েই চলতে থাকে চিকিৎসকদের আন্দোলন। মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করলেও বরফ গলেনি। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ চালু হলেও জটিলতা বহাল থাকে।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রধান চার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। যদিও সেই বৈঠকে বিরোধী সকল রাজনৈতিক দল এই জটিলতার জন্য রাজ্যের শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তোলেন। শাসকদলের প্রতিনিধি এই বিষয়ে মজবুত বক্তব্য পেশ করতে পারেননি রাজ্যপালের কাছে।
এই অবস্থায় শুক্রবার বিকেলের দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সূত্রের খবর, এনআরএস হাসপাতালে জখম হওয়া জুনিয়র চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। এরপরেই জানা যায় যে মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করেছেন রাজ্যপাল।
চলতি সপ্তাহের সোমবার রাতের দিক থেকে তৈরি হয়েছে এই জটিলতা। সপ্তাহ শেষের দিকেও সেই সমস্যা সমাধানের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সকল প্রশাসনিক কর্তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বদ্ধ পরিকর। সূত্রের খবর, এদিনই রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্নে একাধিক বিশিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সেই বৈঠকে চার চিকিৎসক হাজির ছিলেন।
এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপরে হামলার ঘটনায় পুলিশ পাঁচ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে লালবাজার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্য প্রশাসনের একাধিক কর্তার মুখেও সেই কথা শোনা গিয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ধারায় মামলা করা হয়েছে বা কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানান হয়নি।