নির্বাচন খেলা নয় দিদি, তৃণমূল বঙ্গবাসীর কাছে বিপদ : মোদী

পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে বিপদ হল তৃণমূল। দিদি শধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বাংলায় আয়ুষ্মান ভারত চালু করেননি। গরিব মানুষদের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। শনিবার হুগলি জেলার তারকেশ্বরের জনসভা থেকে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন তারকেশ্বরের জনসভায় শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “তারকেশ্বরের এই পবিত্র ভূমিতে ভোলে বাবা আর মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবকে শত শত প্রণাম জানাই।” এরপরই মোদী বলেন, “বাংলার মানুষরা সর্বদা সমস্ত পরীক্ষায় সফল হয়েছে। আর ব্যর্থ তারাই হয়েছে, যারা বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দেয়নি। বাংলার বিকাশ করেনি, তাদেরকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। বাংলায় পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত বাংলার মানুষ। আসল পরিবর্তন চাইছে বাংলার মানুষ। ২ মে কী হতে চলেছে, তার নিদর্শন আমরা দু’দিন আগে নন্দীগ্রামে দেখেছি। আমি জানি প্রত্যেক দফার নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে দিদির অস্থিরতা বাড়তে থাকবে। দিদি! হার আপনার সম্মুখে। আপনি এটা স্বীকার করুন।”মমতাকে কটাক্ষ করে মোদী বলেন, “দিদি নির্বাচন খেলা নয়। গণতন্ত্র খেলা নয়। গণতন্ত্র হল মানুষের সেবার পথ। গণতন্ত্র হল মানুষের উন্নতির পথ। আপনি এগুলো সব ভুলে গিয়েছেন। সেই জন্যই বাংলার মানুষের সঙ্গে আপনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। বাংলার মানুষ পয়সার জন্য বিজেপির জনসভায় যায়, এই কথা বলে আপনি বিজেপিকে নয়, বাংলার জনতাকে অপমান করেছেন।” মোদী আরও বলেছেন, “দিদি বলছেন বিজেপির সমস্ত জনসভায় যে ভিড় হচ্ছে, তা পয়সা দিয়ে করা হচ্ছে। আজ আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করছি, এই ভরদুপুরে প্রখর রোদে আপনারা যে এসেছেন, তার জন্য কি আপনাদের পয়সা দেওয়া হয়েছে? দিদি আপনি আমাকে অপমান করতে পারেন। কিন্তু বাংলার মানুষকে নয়। বাংলায় বিশেষ মাধুর্য রয়েছে। এখানকার ভাষায় মিষ্টতা রয়েছে। এখানকার ভাই-বোনেদের ভাবনায় মিষ্টতা আর এখানকার মানুষের ব্যবহারের মিষ্টতা রয়েছে।”প্রধানমন্ত্রী তারকেশ্বরের জনসভা থেকে আরও বলেছেন, “আপনার মধ্যে এত তিক্ততা কিভাবে আসে দিদি? দিদির অস্থিরতার সব থেকে বড় কারণ হল, ওনার ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড। দিদি বাংলার যুব সমাজের সঙ্গে আপনাকে অন্যায় করতে দেব না।” পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থানের অভাব এই কথা উল্লেখ করে মোদী বলেছেন, “এক সময় ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে মানুষ বাংলার কল-কারখানায় কাজ করতে আসতেন। আজ বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষ চাকরির জন্য বাংলা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এখন বাংলার মানুষ বিশ্বাসঘাতককে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। বাংলায় পুরনো শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। আর নতুন কোনও শিল্প গড়ে ওঠেনি। তৃণমূল বাংলার মানুষের কাছে বিপদ।” মোদী বললেন, “সিঙ্গুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন দিদি। এখানে নেই কোনও শিল্প। নেই কোনও কর্মসংস্থান। পুরো দেশের ১০ কোটির থেকে বেশি কৃষক পি এম সম্মান নিধি পাচ্ছেন। কিন্তু বাংলার লক্ষ লক্ষ কৃষক দিদির নোংরা রাজনীতির জন্য এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।”বঙ্গে বিজেপিই জিতবে, এই আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে মোদী বলেছেন, “২ মে এখানে শুধুমাত্র ডাবল ইঞ্জিন সরকারই তৈরি হবে না, বরং দ্বিগুণ সুবিধা পাবেন বাংলার মানুষ। বন্ধুগণ, আপনারা ২ মে বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার তৈরি করুন। আর প্রথম মন্ত্রিসভার অধিবেশনেই আমরা পিএম সম্মান নিধির  বকেয়া সমেত ১৮ হাজার টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি দেব। পুরো দেশে আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু দিদি এই সুবিধা বাংলার মানুষদের কাছে পৌঁছােতেই দেননি। দিদি রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বাংলায় আয়ুষ্মান ভারত চালু করেননি। গরিব মানুষদের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছেন। অথচ সারা ভারতবর্ষের গরিব মানুষ এই কার্ড ব্যবহার করে ৫ লক্ষ টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.