অঘটন নাকি, দুসাহস! কারন খোদ জেলাশাসকের বাংলোর সীমানা প্রাচীরের ভেতরেই বোমাবাজি! বীরভূমের জেলা সদর সিউড়িতে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিস্মিত শহরবাসী।ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের অন্দরেই।
জানা গেছে, সোমবার রাত দুটো-আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। সিউড়ির গা ঘেঁষে চলে যাওয়া ৬০ নং জাতীয় সড়কের উপরই রয়েছে বীরভূমের জেলাশাসকের বাংলো। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া। জাতীয় সড়কের ধার ঘেষেই বাংলোর সীমানা প্রাচীর। সেই প্রাচীরের ভেতরেই
এক-আধটা নয়, বোমা পড়েছে আট-আটটি।
পড়েছে বোমা।
আটটি জায়গায় মিলেছে বোমার ছাপ,সূতলি। সোমবার গভীর রাতের ঘটনার পর পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টা নিয়ে প্রকাশ্যে খুব একটা হেলদোল দেখাতে না চাইলেও ঘটনার খবর চাউর হয়ে যায় সর্বত্রই। এদিন জেলাশাসকের বাংলো চত্বরে গিয়ে দেখা যায় জাতীয় সড়ক থেকে যে মূল ফটক দিয়ে জেলাশাসক বাংলোয় ঢোকেন তার আশেপাশে ফেটেছে বোমাগুলি। ঘটনাস্থলে এদিন দেখা যায় বম্ব স্কোয়াডকেও। তারা ঘটনাস্থল পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ ছাড়াও করেছে নমুনা সংগ্রহ। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘রাতের বেলায় বাংলোর বাইরের দিক থেকে শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’’ তবে ঘটনার খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন-সাধারণ মহল সর্বত্রই। পড়াটাও স্বাভাবিক। খোদ জেলাশাসকের বাংলোর গায়ে বোমাবাজি আর কোনোদিন হয়েছে কি না মনে করতে পারছেন না কেউই। সাথে সাথে প্রশ্নও উঠেছে কে বা কারা ঘটালো এই ঘটনা ?বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকরা গিয়েছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ তবে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, দিন কয়েক ধরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ বালি কারবারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। যার নেতৃত্বে রয়েছেন জেলাশাসক। বালি কারবারীদের নিয়ম ভেঙে মজুদ করা বিপুল পরিমাণ বেআইনি বালি নিজে হাতেনাতে ধরে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। যার জেরে মামলা রুজু হয়েছে একাধিক। বহু বালি কারবারীকে অভিযুক্ত করে পুলিস হন্যে হয়ে ধরপাকড়ে নেমেছে। এই অভিযানের ফলে বালি কারবারীদের কোটি কোটি টাকার মুনাফা জলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই বালি দু্ষ্কৃতীরা এই কাজ ঘটিয়ে থাকতে পারে। যদিও এব্যাপারে এখনও কোনও স্পষ্ট মতামত জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে মেলেনি। পাশাপাশি ঘটনার পর জেলাশাসকের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে কি না তাও খোলসা করতে চাননি পুলিশ সুপার। তবে এদিন জেলাশাসকের গাড়ির সামনে নিরাপত্তারক্ষী বেষ্টিত বাড়তি একটি এসকর্ট গাড়ি নজরে পড়েছে।