শান্তিনিকেতনে বাম ছাত্রছাত্রীদের হাতে ৫ ঘণ্টা বন্দী বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, চলছে আজাদী’র শ্লোগান

সিএএ নিয়ে বিশ্বভারতীতে আলোচনা সভায় যোগ দিতে এসে বাম ছাত্র ছাত্রীদের বিক্ষোভ আটকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে রয়েছেন বিশ্বভারতীতে। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য এবং বিজেপি নেতা দুধকুমার মন্ডল। বিক্ষোভকারীরা তাঁকে কালো পতাকা দেখায়, তাঁর গাড়ি ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় এবং তারা আজাদী স্লোগান দিতে শুরু করে।

কয়েকদিন আগে বিশ্বভারতী সিএএ বিষয় নিয়ে আলোচনার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বক্তৃতার বিষয় এবং বক্তার নাম দেখেই শুরু হয় বিতর্ক। ছাত্র ছাত্রী অধ্যাপকদের একাংশ সভা বযকটের ডাক দেন। কিন্তু সভা করার বিষয়ে অনড় ছিল বিশ্বভারতী। তাঁরা গোপনে শান্তিনিকেতন থেকে এই সভা শ্রীনিকেতন ক্যাম্পাসে নিয়ে যায়। সেখানে সোসাল ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট এর সভা গৃহে বক্তৃতার আয়োজন হয়।এই খবর পেয়ে যায় আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীরা। সেই মত শ্রীনিকেতনেও পৌছে যায় তারা।

আজ সকাল থেকেই বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে গেট আটকে রাস্তায় বসে শুরু হয় বিক্ষোভ। রবীন্দ্রনাথের গান, কখনও আজাদী শ্লোগান ওঠে বিশ্বভারতী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ঐক্য মঞ্চ থেকে। এতে সামিল হয় এস এফ আই, পিডিএসএফ, ডিএসএ এবং ডিএসওর মত ছাত্র সংগঠন। পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী বেলা তিনটে থেকে শান্তিনিকেতনের লিপিকাগৃহে বক্তৃতা হবার কথা ছিল। সেই মত ঐ গেটও আটকে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্র ছাত্রীরা।

এদিকে পড়ুয়াদের বিরোধিতা সত্ত্বেও বিশ্বভারতীতে যান বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তাঁর গাড়ি পৌঁছতেই বিক্ষোভ চরম আকার নেয়। স্বপনবাবু সোসাল ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট সেমিনার হলে পৌছনো পর বক্তৃতা চলাকালীনই জানালা দিয়ে বিজেপি কালো পতাকা দেখায় পড়ুায়রা। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন তাঁরা। তীব্র শ্লোগানে সেমিনার বন্ধ হয়ে যাওয়ার যোগাড়। অনুষ্ঠান শুরু হবার সময় থেকেই এই সভাঘর অবরুদ্ধ করে ঘেরাও শুরু করে দেয় ছাত্র ছাত্রীদের ঐক্য মঞ্চ। বেলা চারটে থেকে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়েছে স্বপন দাশগুপ্তকে।

ছাত্র ছাত্রীদের ঐক্য মঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বভারতীতে এহেন বক্তৃতার প্রয়োজনীয়তা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কি? তাঁরা এই ঘটনাকেই গৈরিকিকরণ হিসেবেই দেখছেন, কারণ বক্তা একজন বিজেপি সাংসদ।

বিশ্বভারতীর এস এফ আই নেতা সোমনাথ সৌ বলেন, “সিএএ নিয়ে আলোচনায় কেন কোনও বিরোধী পক্ষ নেই। আসলে উপাচার্য এই লেকচার সিরিজ এর নামে, ধরে ধরে বিজেপি লোকদের এনে বিশ্বভারতীকে বিজেপির প্রচার যন্ত্র তৈরি করতে চাইছেন। যা পুরো রবীন্দ্র ভাবনার বিরোধী। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।”

ছবি: সেমিনার কক্ষের ভিতরের দৃশ্য।

অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, আমন্ত্রিত বিশ্বভারতীর লেকচার সিরিজে বক্তা হিসেবে যোগ দিতে এসেছিলাম। আন্দোলনকারীরা আলোচনা সভা আক্রমণ করার চেষ্টা করে। যখন তারা ব্যর্থ হয়, আমাদের আটকে রাখে। এটা গুণ্ডামি এবং বামপন্থী ফ্যাসিসিজমের মিশ্রণ। তারা মনে করে একমাত্র তাদেরই বলার অধিকার আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.