খাস কলকাতায় তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হতে হল দুই পুলিশ কর্মীকে। পদাধিকার বলে একজন বিধাননগর সিটি পুলিশের এএসআই, অপরজন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। তরুণী কসবা থানায় অভিযোগ করায় দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনায় একদিকে যেমন রাতের কলকাতার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। একইভাবে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও সমালোচনার বাণে বিদ্ধ করছে রাজ্য সরকারকে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ১০ বছর পুরসভা চালানোর পর যে দলকে ইস্তাহারে মেয়েদের নিরাপত্তার কথা বলতে হয়, তাদের কাছে মেয়েরা যে কতটা নিরাপদ তা নিয়ে সন্দেহ থাকবেই।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “দেখুন কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস যে তাদের ম্যানিফেস্টো দশ দিগন্ত বা এরকম কিছু একটা নাম দিয়েছে তাতে নারী সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। ১০ বছর কর্পোরেশন চলার পর এখন তাদের মনে হয়েছে নারীদের সুরক্ষা দিতে হবে। নারীদের যে সুরক্ষার অবস্থা কী এই ঘটনা তা প্রমাণ করছে।”
যদিও এ প্রসঙ্গে বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, “যে কোনও খারাপ ঘটনা খারাপ বলেই বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। যদি কেউ ভুল করে থাকে তাহলে আইনের যা সাজা আছে তাই হবে। তবে একটা মানুষের যেমন হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয়, তেমন একজন সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে গোটা পুলিশবাহিনীকে বিচার করা যায় না। পুলিশে অনেক ভাল লোক আছেন। সব জায়গাতেই ভাল মন্দ আছে।”
প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা নিন্দাযোগ্য এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিশের পক্ষ থেকে এরকম ঘটনা মানা যায় না। একই সঙ্গে ট্রাফিক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হয়েছে এই অভিযোগ খুব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করতে হবে। কসবা থানার যে সমস্ত অফিসার আছেন তারা দেখুন। আমার মনে হয় এটা লালবাজারে যাবে তদন্তের জন্য। গোয়েন্দা বিভাগ থেকে তদন্ত হবে। কিন্তু এমন ঘটনা কখনওই বাঞ্চনীয় নয়।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি শুধু কলকাতায় তরুণীর শ্লীলতাহানির প্রসঙ্গই নয়, এদিন তুলে ধরেন আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশন কলোনি থেকে ২১ বাংলাদেশিকে আটকের প্রসঙ্গও। সুকান্ত মজুমদার এ প্রসঙ্গে সমালোচনা করেন কলকাতা পুলিশের। তুলে আনেন নগরপাল সৌমেন মিত্রের প্রসঙ্গও।
সুকান্ত মজুমদারের কথায়, “যথারীতি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ট্র্যাক রেকর্ডকে অক্ষুন্ন রেখে লখনউ থেকে অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াডের কর্তারা এসে পশ্চিমবঙ্গে মানব পাচারে যুক্ত এক ব্যক্তির খোঁজ নিতে গিয়ে কলকাতার গুলশন কলোনি থেকে ২১ জন অপরাধীকে ধরেছে। সেই ২১ জন কারা, যারা সেখানকার মাদ্রাসায় লুকিয়ে ছিল। তাদের কাছে জাল ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড ছিল। কলকাতা পুলিশের কাছে বিন্দুমাত্র খবর ছিল না। বাংলাদেশের নাগরিক সব। রাজ্য পুলিশের অসামান্য দক্ষতা! বরাবরই এমন হয়েছে। আমাদের রাজ্যের পুলিশ জানেই না অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ এসে অপরাধীদের ধরে নিয়ে যায়। আরও একবার কলকাতার পুলিশের সেই দক্ষতা প্রমাণিত হল। এরই মধ্যে সৌমেনবাবু (সৌমেন মিত্র, কলকাতার নগরপাল) দাবি করেছেন, কলকাতা পুলিশ খুব প্রফেশনাল একটা ফোর্স। তাদের অসামান্য প্রফেশনালিজম আরও একবার প্রমাণিত হল।”