আপনার কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি৷ আপনি এখানে আসুন, ওদের কথা শুনুন। এনআরএসে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর্জি জানালেন অপর্না সেন।
শুক্রবার সকালে এনআরএসে যান অভিনেত্রী অপর্না সেন সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়ে এদিন মমতাকে সরাসরি নিশানা করেন অপর্না সেন। প্রশাসনের উপর তাঁরা চাপ সৃষ্টি করবেন বলেও চিকিৎসকদের আশ্বাস দেন তিনি।
এদিন তিনি বলেন, ‘আমি বিনীতভাবে বলছি, যতখানি দায় ডাক্তারদের রয়েছে, ততখানি দায় প্রশাসনেরও রয়েছে।’ বলন, ‘আপনি সকলের মুখ্যমন্ত্রী। আপনি আমাদের অভিভাবক। আপনি আসুন। কথা বলুন।’ অভিভাবকের মত, মায়ের মত ডাক্তারদের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করতে হবে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সব ডাক্তাররা এদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেটা আপনি ভুলে যেতে পারেন না।’
বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের উদ্দেশে অপর্না সেন বলেন, ‘তোমরা রোগীর জাত-ধর্ম মানো না আমি জানি। রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না বলে, তোমরা যে কষ্ট পাচ্ছো, সেটাই আমি জানি।’
মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য বলে অপর্না সেন বলেন, ‘এরা সবাই খুব ভালো ছাত্র ছাত্রী। এরা পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে গেলে কি ভালো হবে?’
এদিন এনআরএসে উপস্থিত ছিলেন অপর্না সেন, কৌশিক সেন, দেবজ্যোই মিশ্র প্রমুখ। প্রত্যেকেই এদিন রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন।
মেলা কিংবা ক্লাবকে টাকা দিয়ে অহেতুক খরচ করার অভিযোগ তোলেন অভিনেতা কৌশিক সেন। বলেন, এই সব খরচের জন্যই চিকিৎসা খাতে টাকা নেই রাজ্যের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরএসে না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতালে যান এবং সেখানে হুমকির সুরে বলেন, ৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে নইলে ওই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী , আন্দালোনকারীদের উদ্দেশ্য বলেন এরা ডাক্তার নন বহিরাগত।
এরপর ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় এনআরএস হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাত করেই একদল বহিরাগত আন্দোলনকারী ডাক্তারদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ ওঠে। হকিস্টিক হাতে এই হামলা চালানো হয়। যদিও সেই সময় আন্দোলন মঞ্চে কেউ না থাকায় বড়সড় গণ্ডগোল এড়ানো সম্ভব হয় বলে দাবি এনআরএসের জুনিয়র ডাক্তারদের।
গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত এনআরএস। ১০ জুন রাতে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সরকারি হাসপাতাল চত্বর৷ চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে৷ অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রথমে মারধর করে মৃতের বাড়ির লোকেরা৷ পরিবহ মুখোপাধ্যায় নামে এক জুনিয়র ডাক্তার গুরুতর আহত হন। তাঁর মাথায় ভয়ঙ্কর চোট লাগে। অস্ত্রোপচারের পর আপাতত সুস্থ তিনি। কিন্তু আন্দোলন ছড়িয়েছে গোটা দেশ জুড়ে।