বিশ্বকাপে বড় অঘটন, দুধের শিশু আমেরিকার কাছে লজ্জার হার পাকিস্তানের, সুপার ওভারে নিষ্পত্তি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমেরিকার বিরুদ্ধে বিপর্যয় পাকিস্তানের। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েও বাবর আজ়মের দল করে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান। টস জিতে ফিল্ডিং নেন আমেরিকার অধিনায়ক মোনাঙ্ক পটেল। জবাবে আমেরিকাও করে ৩ উইকেট ১৫৯ রান। খেলার নিষ্পত্তি হল সুপার ওভারে। তাতেও এঁটে উঠতে পারলেন না বাবরেরা।

সুপার ওভারে আমেরিকা প্রথমে ব্যাট করে তোলে ১৮ রান। মহম্মদ আমির তিনটি ওয়াইড বল করে আমেরিকাকে সুবিধা করে দেন। অ্যারন জোন্স করলেন ১১ রান। জয়ের জন্য পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯ রান। পাকিস্তান নামায় ফখর জামান এবং ইফতিকার আহমেদকে। সৌরভ নেত্রাভালকরের দ্বিতীয় বলে চার মারেন ইফতিকার। কিন্তু তৃতীয় বলে আউট হয়ে যান। দুরন্ত ক্যাচ ধরেন নীতীশ কুমার। নামেন শাদাব খান। তাতেও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত ১৩ রান করে ৫ রানে হেরে গেল পাকিস্তান।

এর আগে ব্যাটিং বিপর্যের মুখে পড়ে পাকিস্তান। বাবরের ৪৩ বলে ৪৪ এবং পাঁচ নম্বরে নামা শাদাবের ২৫ বলে ৪০ রানের ইনিংস ছাড়া পাকিস্তানের প্রথম সারির সব ব্যাটারই ব্যর্থ হলেন নাসাউ কাউন্টির ২২ গজে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নেত্রাভালকরের বলে আউট হয়ে যান মহম্মদ রিজ়ওয়ান (৯)। তিন নম্বরে নামা উসমান খান (৩) পরের ওভারেই নসটুশ কেনজিগের বলে আউট হয়ে যান। ব্যর্থ হলেন চার নম্বরে নামা ফখর জামানও (১১)। তাঁকে আউট করেন পাক বংশোদ্ভূত আলি খান। উইকেটের এক প্রান্তে সতীর্থেরা পর পর আউট হলেও এক দিন আগলে রেখেছিলেন বাবর। যদিও পরিস্থিতির চাপে দ্রুত রান তুলতে পারেননি। প্রথম ৬ ওভারে পাওয়াপ প্লেতে ৩ উইকেটে ৩০ রান করে পাকিস্তান। বাবরের ৪৪ রানের ইনিংসে রয়েছে ৩টি চার এবং ২টি ছয়। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে শাদাবের সঙ্গে বাবর যোগ করেন ৭২ রান। তাঁদের জুটিই মূলত পাকিস্তানের ইনিংসকে ভরসা জোগায়। শাদাবের ৪০ রানের ইনিংসে রয়েছে ১টি চার এবং ৩টি ছক্কা। ব্যর্থ হলেন আজ়ম খানও (শূন্য)। তাঁকেও আউট করেন কেনজিগে।

শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাটিং করে পাকিস্তানকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দিলেন ইফতিকার আহমেদ এবং শাহিন আফ্রিদি। ইফতিকার ৩টি চারের সাহায্যে ১৪ বলে ১৮ রান করেন। আফ্রিদি শেষ পর্যন্ত ছিলেন ২২ গজে। তাঁর ১৬ বলে ২৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে রয়েছে ১টি চার এবং ২টি ছক্কা। ৩ রানে অপরাজিত থাকেন হ্যারিস রউফ।

আমেরিকার সফলতম বোলার কেনজিগে ৩০ রানে ৩ উইকেট নেন। ১৮ রানে ২ উইকেট নেত্রাভালকারের। ৩০ রানে ১ উইকেট আলির। ৩৭ রান দিয়ে ১ উইকেট যশদীপ সিংহের।

জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আমেরিকার ব্যাটারেরা শুরু করেন সাবলীল ভাবে। পাকিস্তানের বোলারদের অযথা সমীহ করেননি মনাঙ্কেরা। পাওয়ার প্লেতে আফ্রিদি, আমিরদের বিরুদ্ধে সহজেই রান তোলেন তাঁরা। স্টিভন টেলর রান পেলেন না এ দিন। নাসিম শাহের বলে আউট হন তিনি। ১৬ বলে করেন ১২ রান। প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪৪ রান তোলে আমেরিকা। তার পরেও রান তোলার গতি কমেনি আমেরিকার। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে মনাঙ্কের সঙ্গে আন্দ্রিস গাউস তোলেন ৬৮ রান। উইকেটরক্ষক ব্যাটার করেন ২৬ বলে ৩৫ রান। ৫টি চার এবং ১টি ছক্কা মারেন তিনি। আফ্রিদিকে বিশাল ছক্কা মেরে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন আমেরিকার অধিনায়ক। ৩৮ বলে ৭টি চার ১টি ছক্কার সাহায্যে ৫০ রান করে আউট হন তিনি। ২২ গজে জমে যাওয়া দুই ব্যাটার পর পর আউট হওয়ায় চাপে পড়ে যায় আমেরিকা। তার পর আমেরিকার ইনিংসের হাল ধরেন জোন্স এবং নীতীশ। জোন্স ২৬ বলে ৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন। মারলেন ২টি করে চার এবং ছক্কা। নীতীশের ব্যাট থেকে এল ১৪ বলে ১৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ২০ ওভারে আমেরিকাও ১৫৯ রান তুলল ৩ উইকেট হারিয়ে। ফলে খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে আমির ২৫ রানে ১ উইকেট নেন। ২৬ রানে ১ উইকেট নাসিমের। ৩৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন রউফ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.